সকল মেনু

রানীনগরে আরও পাঁচটি স্থানে ভেঙেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বেতগাড়ী, ঘোষগ্রাম ও কৃষনপুর নামক স্থানে আরও পাঁচটি স্থানে ছোট যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ  বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বন্যায় জেলা সদরের সঙ্গে আত্রাই উপজেলার ও নাটোর জেলার সঙ্গে  সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মান্দায় দুইটি, আত্রাইয়ে একটি এবং রানীনগরের ছোট যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ  বাঁধ পাঁচটি স্থানে ভেঙে গেছে। বন্যার পানিতে নওগাঁর ছয় উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক বিঘার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার পুকুরের মাছ। এতে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জেলার ছয়টি নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপৎসীমার এখনও ৬০ সেন্টেমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মান্দায় নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে রয়েছে বন্যাকবলিত এলাকার লাখ লাখ মানুষ। বাঁধ ভেঙে গিয়ে ঘরবাড়ি ও ফসল ডুবে যাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই দায়ী করছে ভুক্তভোগীরা।
অসহায় পরিবারগুলো এখন বিশ্ব বাঁধ, স্কুল ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও সরকারি সাহায্য বা ত্রাণ তাদের কাছে না পৌঁছায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার তৈহিদুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় জানান, ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে পানি ধেয়ে আসছে এবং ধামইরহাট উপজেলার সীমান্তবর্তী শিমুলতলি বিজিবি হার্ড পয়েন্টের নিকট বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ২০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়ক এক ফুট পানির নিচে থাকলেও এর মধ্য দিয়েও যানবাহন চলছে। এ ছাড়া পুরাতন কালেকটরেট ভবন চত্বর, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের বাসভবন, জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, বিহারী কলোনি, নাপিতপাড়া, উকিলপাড়া, কালীতলা, পার-নওগাঁসহ শহরের বিভিন্ন স্থান এক থেকে দেড় ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানি এখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া বিনতে তাবিব বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ব্যাপক নজরদারি রাখা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ও পরিবারের তথ্য সংগ্রহে কাজ চলছে। বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত মানুষের জন্য জরুরিভাবে তিন মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। ”

জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান গতকাল সোমবার দুপুরে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বন্যাকবলিতদের মাঝে সামান্য ত্রাণ  সামগ্রী দেয়ার কথা বললেও বিকেল ৩টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি সেখানে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top