সকল মেনু

বাউলশিল্পী ও পোশাককর্মী ধর্ষণ,বাসা বদল করেও রক্ষা পায়নি কিশোরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও সাভার: বখাটেদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এক বছর আগে বাসা বদল করেছিল কিশোরীর পরিবার। তারপরও ধর্ষকদের কবল থেকে রেহাই পায়নি সে। গত বুধবার রাতে পাঁচ বখাটে তাকে ধরে রাজধানীর উত্তরখানের হেলাল মার্কেটের পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের চতুর্থ তলায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে আশুলিয়ায় বাউলশিল্পী এবং গাজীপুরে পোশাককর্মী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আশুলিয়ার ঘটনায় পুলিশ দুজনকে এবং গাজীপুরের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

উত্তরখানের ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার শেখ নাইম হোসেন, আহাদুল ইসলাম, আবুল কালাম, জাহাঙ্গীর আলম ও অপু সরকার গতকাল শুক্রবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।

ওই কিশোরীর বাবা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তিনি উত্তরখান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। বছরখানেক আগে একই এলাকার শেখ আনোয়ার হোসেনের ছেলে শেখ নাইম হোসেন তাঁর মেয়ের মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে মেয়েকে বিরক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে নাইমকে শাসানো হয়। এরপর নাইম স্কুলে আসা-যাওয়ার পথেও মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। শেষ পর্যন্ত তাঁরা অন্যত্র বাসা ভাড়া নেন। তিনি বলেন, বুধবার তাঁর মেয়েকে বড় মেয়ের বাসায় একটি কাগজ আনতে পাঠানো হয়েছিল। রাত আটটার দিকে তার মুঠোফোনটি বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

উত্তরখান থানার পুলিশ জানায়, রাত আটটার দিকে বখাটে নাইম, আহাদুল ইসলাম, আবুল কালাম, জাহাঙ্গীর আলম ও অপু সরকার ওই কিশোরীর ইজিবাইকের গতি রোধ করে। বখাটেরা ওই কিশোরীকে ইজিবাইক থেকে কথা বলার জন্য নামায়। একপর্যায়ে রাত নয়টার দিকে হেলাল মার্কেটের পাশের নির্মাণাধীন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মুখ বেঁধে রাত আড়াইটা পর্যন্ত তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষকেরা চলে গেলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মার্কেটের সামনে এসে মেয়েটি কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় টহল পুলিশ তার কাছে ঘটনার বিবরণ শোনে এবং তাকে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ মেয়েটির কাছ থেকে ধারণা নিয়ে গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে পাঁচ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষকদের বাসা হেলাল মার্কেটের আশপাশে। তারা বখাটে ও ইয়াবাসেবী। গতকাল পাঁচ ধর্ষক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

বাউলশিল্পী ধর্ষণের শিকার

ঢাকার আশুলিয়ার আউকপাড়া এলাকায় প্রস্তাবিত একটি আবাসন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়কের বাসায় বুধবার রাতে এক বাউলশিল্পীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। তাঁরা হলেন আউকপাড়া এলাকার আবদুর রাজ্জাক (৪২) ও আবাসন প্রকল্পটির নিরাপত্তা প্রহরী আতাউর রহমান (৪০)। আতাউর প্রকল্পটির তত্ত্বাবধায়ক ও মামলাটির আসামি আবদুল কাদেরের ভাই।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগে সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জে একটি মাজারে গান গাওয়ার সময় ওই নারীর (৩৫) সঙ্গে সেলিনা নামের এক শিল্পীর পরিচয় হয়। সেলিনা তাঁকে ফোন করে আউকপাড়া এলাকায় বিয়েবাড়িতে গান গাওয়ার কথা বলে আসতে বলেন। তিনি বুধবারবিকেলে আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে আসেন। সেখানে ‘মেজ ভাই’ পরিচয় দেওয়া একজন তাঁকে আউকপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাত ১০টার দিকে তাঁকে ওই আবাসন প্রকল্পের ভেতরে তত্ত্বাবধায়ক আবদুল কাদেরের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে কথিত মেজ ভাই, কাদেরসহ ১০-১২ জন তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে তাঁরা ওই নারীকে ঘরে তালা দিয়ে রাখেন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে।

থানার পুলিশ জানায়, মেজ ভাইয়ের প্রকৃত নাম রাকিবুল ইসলাম ওরফে বাকু। তাঁর বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। তিনি আবাসন প্রকল্পটির পাশে ভাড়া থেকে গাড়ি চালান। আবদুল কাদের ও আতাউরের বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ে। সেলিনা নামের কাউকে এলাকার লোকজন চেনেন না।

আশুলিয়া থানার ওসি আবদুল আউয়াল বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বাউলশিল্পীকে ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

ধর্ষণের শিকার পোশাককর্মী

গাজীপুর প্রতিনিধি জানান,গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় বৃহস্পতিবার মুদি দোকানির বিরুদ্ধে এক নারী পোশাককর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রাতেই থানায় মামলা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই নারী (১৯) বৃহস্পতিবার সকালে নিজ ঘরে ছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী আকরাম হোসেন কৌশলে ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আকরাম পালিয়ে যান। পরে বিষয়টি কাউকে না জানাতে এবং মামলা না করতে আকরামের পক্ষের লোকজন ওই নারী ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখান। সন্ধ্যার দিকে ওই নারী ও তাঁর পরিবারের লোকজন কৌশলে থানায় গিয়ে মামলা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top