সকল মেনু

টেলিকম কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহ কম, শর্তের অজুহাত

হটনিউজ ডেস্ক: পুঁজিবাজারে আসতে টেলিকম কোম্পানিগুলোর আগ্রহ বরাবরই কম। টুজি, থ্রিজি গাইডলাইনে ৩০ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়ার কথা থাকলেও একমাত্র গ্রামীণফোন ছাড়া অন্যকোনও অপারেটর সেই পথে হাঁটেনি। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার ‘শর্ত’কে ঢাল হিসেবে দেখছে। আর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লাভে থেকেও পুঞ্জিভূত লোকসানের কারণে পুঁজিবাজারে আসতে পারছে না বলে দাবি করছে।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নানা শর্তের কারণে দেশের পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী নয় মোবাইল ফোন অপারেটররা। ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে স্থানীয় মূলধন যোগান ও নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ করছে অপারেটরগুলো। দ্বিতীয় প্রজন্মের (টুজি) লাইসেন্স নবায়ন নীতিমালায় গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও সিটিসেলকে ২০১৩ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এরমধ্যে চার বছর পার হয়ে গেলেও এখনও মোবাইল অপারেটররা সে ধরনের কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। জানা যায়, থ্রিজি’র গাইডলাইনে বিধানটি রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে ফোরজি’র খসড়া নীতিমালায়ও বিষয়টি রাখা হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারবাজারে আসার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা মানেনি মোবাইলফোন অপারেটর টেলিটক এবং টেলিকম কোম্পানি টেশিস (টেলিফোন শিল্প সংস্থা)। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের (সাবেক মন্ত্রণালয়) সে সময়ের মন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, শিগগিরই টেলিটকের বিষয়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এবং প্রসপেক্টাস অনুমোদনের জন্য এসইসিতে পাঠানো হবে। এখনও কাজটি ওই ‘শিগগিরই’তে আটকে আছে। সে সময়ে বাজারে শেয়ার ছেড়ে ৬০০ কোটি টাকা তুলতে আগ্রহী ছিল টেলিটক। অপারেটরগুলোর মধ্যে একমাত্র গ্রামীণফোনই পুঁজি বাজারে তালিকাভুক্ত হয় নীতিমালা তৈরির আগেই। প্রতিষ্ঠানটি তার মোট শেয়ারের ১০ শতাংশ বাজারে ছেড়েছে। অবশিষ্ট শেয়ার বাজারে ছাড়ার বিষয়ে গ্রামীণফোনের কোনও অগ্রগতি জানা যায়নি।

গ্রামীণফোনের একজন কর্মকর্তা নিজেকে উদ্ধৃত না করে বলেন,‘এটা তো শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়। ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত বিষয়টি মোটেও তাদের ইস্যু নয়।’ শেয়ারহোল্ডাররা মনে করলে বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতি হতে পারে বলে তিনি জানান।

সরকারের আরেকটি কোম্পানি টেশিস লাভে থাকলেও পুঞ্জিভূত লোকসান থাকায় প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে আসতে পারছে না। এ বিষয়ে টেশিসের কোম্পানি সচিব মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘পুঞ্জীভূত লোকসান থেকে বেরিয়ে এসে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো গেলে টেশিসকে নিয়ে পুঁজিবাজারে আসা সম্ভব হবে। সরকার পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে সাহায্য করলেও পুঁজিবাজারে আসা সহজ হয়।’

অন্যদিকে আরেকটি সরকারি টেলিকম কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) কয়েক বছর ধরে পুঁজিবাজারে রয়েছে।

রবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবীর বলেন, ‘রবি এসইসি’র সব শর্ত মেনেই পুঁজিবাজারে যাবে।’ তিনি জানান, যারা দেশে এফডিআই (ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) নিয়ে আসছে, তাদের পুঁজিবাজারে আসার বিষয়টি ম্যান্ডেটরি নয়। রবি যেদিন এসইসি’র সব শর্ত পূরণ করতে পারবে, তখন পুঁজিবাজারে আসবে।’

বাংলালিংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বাংলালিংক সবে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। এসইসি’র শর্ত অনুযায়ী পুঁজিবাজারে আসার জন্য পরপর তিন বছর সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে মুনাফা করতে হবে । বাংলালিংক এখন সেই অপেক্ষায় আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিআরসি’র এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘অপারেটরগুলোকে পুঁজিবাজারে আসতে আমরা বাধ্য করতে পারি না। যাদের পক্ষে সম্ভব তারা আসবে।’ তিনি মনে করেন, এসইসি নিয়ম শিথিল করলে টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজি বাজারে আসার পথ সহজ হতে পারে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top