সকল মেনু

আ. লীগের সংলাপ সবার শেষে

হটনিউজ ডেস্ক: রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবার শেষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করতে চায় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সাংবাধানিক প্রতিষ্ঠানটি। অবশ্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কাকে দিয়ে ও কোন পদ্ধতিতে সংলাপ শুরু হবে, বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে সোমবার অনুষ্ঠিত সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপকে ‘অত্যন্ত সফল’ ও ইতিবাচক বলে মনে করছে ইসি। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সুপারিশ সরকার ও রাজনৈতিক দলের কাছে বড় বার্তা বলে মনে করছে কমিশন।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুশীল সমাজের পর ইসি গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ করবে। ইসি দুই ধাপে সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ করতে চায়। এরই অংশ হিসেবে ১০ আগস্ট গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রথম দফায় বসতে চায় কমিশন। পরের সপ্তাহের প্রথম দিকে তারা দ্বিতীয় দফায় বসার পরিকল্পনা করছে। বুধবার কমিশন বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এদিকে গণমাধ্যমের পর চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ইসি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবে। এরপর নারী সংগঠন ও সবার শেষে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবে কমিশন।

জানা গেছে, ইসি নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করবে। তবে, বৈঠকটি নিবন্ধনের ক্রমিক, না নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী হবে, সেই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে, সপ্তাহে তিন দিন সকাল-বিকাল দু’টি দলের সঙ্গে সংলাপে বসার পরিকল্পনা করছে কমিশন। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে পৃথক দু’টি দিনে বসতে চায় তারা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইসি সবশেষে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করার চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর কারণ হিসেবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে অনেক দেন দরবার থাকে। অন্যান্য দলের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন আসে। যার কারণে শেষ দিকে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসার কথা ভাবছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী মঙ্গলবার বলেন, ‘কোন প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হবে, সেটা আমরা এখনও ঠিক করিনি। তবে, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে মাঝে এক বা দুই দিন বিরতি দিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সকাল-বিকাল দুই দফা সংলাপ করব।’

এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বড় দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হয়তো শেষের দিকে হবে। আর বড় দল হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপটাও হয়তো শেষভাগেই পড়বে। তবে এসব বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কমিশনাররা সবাই বসে বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।’

সুশীল সমাজের সংলাপ সফল

সংলাপ নিয়ে সফলতা-ব্যর্থতার দোলাচলে থাকলেও সুশীল সমাজের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রথম সংলাপটিকে সফল মনে করছে কমিশন। মঙ্গলবার তাদের অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে। তাদের মতে, অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে সংলাপ হয়েছে। সুশীল সমাজ থেকে গঠনমূলক ও ইতিবাচক পরামর্শ এসেছে। কমিশন এই সংলাপের সাফল্যের ধারাবাহিকতা আগামী সংলাপগুলোতেও প্রত্যাশা করছে।

জানা গেছে, সংলাপের পরদিন মঙ্গলবার কমিশনার অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রথম দিনের সংলাপ পর্যালোচনা করে ছেন। তারা মনে করেন, এ সংলাপ অত্যন্ত সফল হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উঠে এসেছে। এ সংলাপের মধ্য দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি ক্ষেত্র তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে সংলাপ হয়েছে। আমরা যে উদ্দেশ্যে সংলাপের জন্য সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, তা সফল হয়েছে। তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। এসব সুপারিশ ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসহ দেশবাসী জেনে গেছে। আমরা বাকি সংলাপ করে কমিশন থেকে প্রতিবেদন আকারে সবার কাছে পাঠব।’

কর্মকর্তারা জানান, তারা সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠকে উঠে আসা বক্তব্য রেকর্ড করেছে। ওই রেকর্ড অনুযায়ী কে কী বক্তব্য দিয়েছেন, তা লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। একইভাবে অন্যান্য সংলাপেরও রেকর্ড করা হবে। রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর থেকে সংলাপে যেসব সুপারিশ আসবে, সেটাকে সামনে রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করতে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করবে। অবশ্য সোমবার নিজ বক্তব্যে ইঙ্গিত করেছেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা। সিইসি বলেছেন, ‘প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন আয়োজন করা হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top