সকল মেনু

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অবরুদ্ধ

হটনিউজ ডেস্ক: ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাতিন দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বেসরকারি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। তাদের দাবি, আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করাসহ লাঞ্ছিত শিক্ষকের পুনর্বহাল করা না হলে ভিসিকে ভবন থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১ ও ২ নম্বর ভবনের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে লাঞ্চিত শিক্ষক ফারহান উদ্দিন বলেন,‘অন্যায়ভাবে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার বিচার না হলে এটি খারাপ নজির হয়ে থাকবে।’ এসময় শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করেন, আজকের মধ্যে তাদের দাবি আদায় না হলে ভিসিকে ভবন থেকে বের হতে দেবেন না। এরপর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ ও ২ নম্বর ভবন থেকে বের হওয়ার বিভিন্ন পথে অবস্থান নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন,‘আমি প্রথম দিকে ফারহান স্যারের ওপর বিরক্ত ছিলাম। কারণ উনি আমাকে মার্কস কম দিতেন। পরে বুঝতে পারলাম উনি সবার ক্ষেত্রেই সঠিক মার্কিং করেছেন। মুখ দেখে কিংবা স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে তিনি কখনও মার্কিং করতেন না। এরপর থেকে তার ভক্ত হয়ে যাই আমি।’

অর্থনীতি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন,‘এটি শুধু আইন বিভাগের ইস্যু না। একজন শিক্ষককে যেভাবে অপদস্থ করা হয়েছে, যে প্রক্রিয়ায় ছাঁটাই করতে চেয়েছিল প্রশাসন তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এজন্য সব বিভাগের শিক্ষার্থীরাই এই আন্দোলনে মাঠে নেমেছেন।’

 

একজন ছাত্রী বলেন,‘একজন শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা এটি তো কোনও শিক্ষার্থী মেনে নিতে পারে না। আমরা আন্দোলন করছি বলে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

এসময় পাশে থাকা আরেক শিক্ষার্থী বলেন,‘আমাকেও চুপ থাকতে বলা হয়েছে।’ এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মাইক নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের বিদ্যমান কালচারের সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। অনেক টাকা খরচ করে পড়াশোনার জন্য এখানে ভর্তি হয়েছি। তার মানে এই নয় যে, আমরা শিক্ষকের গায়ে হাত তুলতে দেবো।’

 

এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ারে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,‘এখন এই ইস্যুতে সবাইকে এক হওয়ার সুযোগ করে এসেছে। এই সুযোগে আমাদের অন্যান্য সমস্যা সমাধানেও সোচ্চার হতে হবে।’ আরকেজন বলেন, ‘সেমিস্টারের টাকা বাকি থাকায় যখন একজন শিক্ষার্থীকে ক্লাস রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়, তখন ওই শিক্ষার্থীর মনের অবস্থা তারা বোঝার চেষ্টা করেন না। এভাবে চলতে চলতেই তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফারহান স্যারের এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের স্বৈরাচারী আচরণের নিন্দা জানাই আমরা।’

এদিকে, রেজিস্ট্রার সহুল আফজাল বের হয়েছেন-এমন তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা ১ও ২ নম্বর ভবনের সামনে থেকে দৌড়ে চলে যান পাশের সিদ্দিক টাওয়ারের রেজিস্ট্রার ভবনে। এসময় রেজিস্ট্রার ভবনের একজন কর্মকর্তাকে ঘিরে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

লাঞ্চিত শিক্ষক ফারহান উদ্দিন সেখানে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদোর বলেন, ‘আমরা কারও গায়ে হাত তুলতে পারি না। তখন তিনি ওই কর্মকর্তাকে ছাড়িয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফের আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীদের।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top