সকল মেনু

নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফপাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ-এর পদত্যাগের পর এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন কে হচ্ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন নওয়াজের ভাই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ক্ষমতাসীন দল মুসলিম লিগের সূত্রগুলো বলছে, এরইমধ্যে এ পদের জন্য তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি।

আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়ন পেলে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন শাহবাজ শরিফ।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষিত হলেও নিজ দলে নওয়াজ শরিফ বিপুল জনপ্রিয়। ফলে তার ভাই শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হলে তুলনামূলক স্বস্তিতে থাকবেন নওয়াজ সমর্থকরা। তাছাড়া এই সংকটকালীন মুহূর্তে ভাইয়ের পাশেই ছিলেন শাহবাজ।

নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) এখন দেশটির পার্লামেন্টের বৃহত্তম দল। ফলে দলের প্রধান নওয়াজের মনোনীত প্রার্থীই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। সে বিবেচনায়ও এগিয়ে আছেন শাহবাজ শরিফ।

২০১৩ সালের জুন থেকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শাহবাজ শরিফ। এর আগে ১৯৯৭-৯৯ এবং ২০০৮-২০১৩-র মার্চ পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-র সভাপতি নির্বাচিত হন। দক্ষ প্রশাসক হিসাবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কন্যা মারিয়াম নওয়াজ শরিফকে নিজের রাজনৈতিক উত্তরসূরী হিসেবে প্রস্তুত করছিলেন নওয়াজ। তবে মারিয়াম নির্বাচিত এমপি না হওয়ায় এই মুহূর্তে তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই।

সম্ভাব্য অর্ন্তবর্তী প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় শাহবাজ শরিফ ছাড়াও আরও কয়েকজনের নাম আসছে। তাদের মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক, পরিকল্পনা ও উন্নয়নমন্ত্রী আহসান ইকবাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

এর আগে ২৮ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি মামলায় নওয়াজের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার কিছু সময় পর তিনি পদত্যাগ করেন। বিচারপতি আসিফ সাইদ খোসার নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে রায় ঘোষণা করেন। সর্বোচ্চ আদালত বলছে, পার্লামেন্ট এবং আদালতের প্রতি সৎ ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী, তিনি দায়িত্ব পালনে অযোগ্য বিবেচিত হয়েছেন। আমিরাতভিত্তিক অফশোর কোম্পানি এফজেডই-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা গোপন করার কারণে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার খানিক বাদেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়। জারিকৃত নোটিতে বলা যায়, সর্বোচ্চ আদালতের রায় তাকে অযোগ্য ঘোষণা করলেও তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

এ মামলায় শুনানি হয়েছিল আদালতের দুই নম্বর কক্ষে। রায় ঘোষিত হয়েছে এক নম্বর কক্ষে। পাকিস্তানের স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে রায় ঘোষণার কথা থাকলেও তা আধ ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। বেলা ১২টার খানিক পরে বিচারপতি আসিফ সাইদ খোসা রায় ঘোষণা করেন।সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষিত রায়ে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ পার্লামেন্ট ও আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি তার দফতরের জন্যও উপযুক্ত বলে গণ্য হননি’। সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, এ রায়ের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার পদ ধরে রাখার ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন।

২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে অবৈধ বিনিয়োগের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিশন গঠন করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বহুল আলোচিত পানামা পেপারস ফাঁসের পর বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দলের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। সূত্র: আল জাজিরা,ডন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top