সকল মেনু

রাস্তা-ঘাটে, যত্রতত্র কোরবানীর পশু জবাই করা যাবে না -এলজিআরডি মন্ত্রী

হটনিউজ ডেস্ক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, পবিত্র ঈদ উল আযহা মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসবে পশু কোরবানীকরণে পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। রাস্তা-ঘাট বা উন্মুক্ত খোলা স্থানে যেখানে পরিবেশ দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেখানে পশু জবাই থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।
মন্ত্রী আজ সচিবালয়স্থ স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানীর পশু জবাই এবং দ্রুত বর্জ্য অপসারণকল্পে সিটি কর্পোরেশনসমূহের কর্মপরিকল্পনা ও প্রস্তুতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্বকালে এসব কথা বলেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ সাঈদ খোকন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সরফুদ্দীন আহম্মেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিব ইকরামুল হক, অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম (মহাপরিচালক), ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও দপ্তর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত স্থানে পশু জবেহকরণ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে সাথে সাথে পরিবেশগত দিকেও সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। নির্ধারিত স্থানে পশু জবেহকরণে জনগণকে উৎসাহিত করতে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি স্থানীয় সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন।
মন্ত্রী বলেন, গত বছর সীমিত পর্যায়ে নির্ধারিত স্থানে পশু জবেহকরণ চালু হয়েছিল। এবছর বৃহৎ পরিসরে সারাদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে যে অর্থ ব্যয় হবে তার খাত চিহ্নিত করার জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সার্কুলার জারির নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ ব্যয় করতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় তাৎপর্যের পাশাপাশি কোরবানী বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের চামড়া শিল্পের সিংহভাগ কাঁচামাল কোরবানীর চামড়া হতে যোগান হয়। প্রশিক্ষিত কসাইয়ের মাধ্যমে পশু প্রক্রিয়াজাত করলে এ খাত লাভবান হবে। তিনি বলেন, কোরবানীর বর্জ ব্যবস্থাপনা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। বড় বড় শহর ও পৌর এলাকাসমূহে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কষ্টসাধ্য। গ্রামীণ বা মফস্বলে এ সমস্যা ততটা প্রকট নয়। তিনি গত বছর কোরবানীর বর্জ্য পরিষ্কারে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, যদি ৪৮ ঘন্টা সময়ের মধ্যে কোরবানীর বর্জ্য পরিষ্কারের কথা ছিল। সিটি কর্পোরেশনসমূহ ২৪ ঘন্টায় তা সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন, নির্ধারিত স্থানে কোরবানীর পশু জবেহকরণ ও দ্রুত বর্জ্য নিষ্কাশনে আমাদের প্রস্তুতি সন্তোষজনক। গ্রামীণ জনপদে ৮০-৯০ শতাংশ কোরবানী বাড়ির আঙ্গিনায় হয়। সেখানে ততটা সমস্যা হয় না। সমস্যা যা হয় তা বড় বড় শহরে। ঢাকা শহরেই মোট ৫ লাখেরও অধিক পশু কোরবানী হয়। এত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি সরকারের অন্যান্য সংস্থাসমূহকেও এ ব্যাপারে কাজ করার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এড়াবৎহধহপব ওহহড়াধঃরড়হ টহরঃ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরসমূহ একসাথে কাজ করলে গত বছরের তুলনায় আরও সফলতা আসবে।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ সাঈদ খোকন বলেন, ধীরে ধীরে এ বিষয়ে নগরবাসী সচেতন হচ্ছে। প্রাকৃতিক কারণে সফলতা গত বছর কম হলেও এ বছর তিনি সফল হবার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৫৫৫ টি স্থান নির্ধারণ করেছে যা আনুমানিক ২.৫০ লক্ষ পশু কোরবানীর জন্য অপ্রতুল। তবে বাস্তবিক চিত্র হচ্ছে অনেকেই বাসা-বাড়ীর আঙ্গিনায় কোরবানী দেন। সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য নিষ্কাশনে সক্ষম।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, সিটি কর্পোরেশনে নির্ধারিত স্থান বাসা-বাড়ী হতে দূরে হলে মানুষ পশু ও মাংস পরিবহন ঝামেলার কারণে এ ব্যাপারে কম আগ্রহ দেখায়। তিনি গত বছরের তুলনায় এ বছর আরও বেশি পরিমানে মানুষ নির্ধারিত যত্রতত্র পশু কোরবানী না করে নির্ধারিত স্থানে কোরবানীর ব্যাপারে উৎসাহিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণ তাদের প্রস্তুতির কথা জানান।
সভার শুরুতে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত স্থানে পশু জবেহকরণ ও বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যাপারে তাদের প্রস্তুতির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য যত্রতত্র কোরবানীর পশুর হাট স্থাপন না করা এবং যেখানে সেখানে কোরবানীর পশু জবাই না করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুশাসন প্রদানের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে ৪ টি আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথমবারের মত নিদিষ্ট স্থানে কোরবানীর পশু জবেহ করার কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালে বৃহৎ পরিসরে এ সংক্রান্ত কাজ শুরু হয়।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top