সকল মেনু

রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত: মৃত ১৫৬

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে হতাহতের ঘটনায় তিন দিন পর আজ শুক্রবার সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের চলমান উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলায় এই দুর্যোগে এ পর্যন্ত ১৫৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ ১১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

গত সোমবার রাত থেকে রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ি ঢল ও ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষাপটে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা।

শুক্রবার বিকেলে রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী দিদার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও চট্টগ্রাম থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ৬০ সদস্য সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে চতুর্থ দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে বিকেল পৌনে ৬টায় এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মানজারুল মান্নান বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। ভূমি ধসের বিষয়টি প্রাকৃতিক। বৈশ্বিক আবহাওয়ার পরিবর্তন ও ভারি বর্ষণে এ ঘটনা ঘটেছে। এবারের ভারি বর্ষণে রাঙামাটির সব পাহাড়ের চূড়া ভেঙে গেছে। এটা ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা। আমরা সচেতন থাকব।’

ঢাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থানা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, পাহাড় ধসে রঙামাটিতে ১১০ জন, চট্টগ্রামে ২৩ জন, বান্দরবানে ৬ জন, কক্সবাজারের ২ জন ও খাগড়াছড়িতে ১ জনের প্রাণহানির তথ্য তাদের হাতে পৌঁছেছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ঢলে ভেসে গিয়ে, গাছ ও দেয়ালচাপায় এবং বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৪ জনের।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মোহাম্মদ এখতিয়ার আরাফাতি জানিয়েছেন, জেলায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১১০ জনে দাঁড়িয়েছি।

উদ্ধার কাজে জেলা প্রশাসনসহ সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় তরুণ-যুবা ও বিভিন্ন সংগঠন সহায়তা করেছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, গত সোমবার থেকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ধসে সৃষ্ট বিপর্যয়ে রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সর্বমোট ১৫৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই পার্বত্য জেলাগুলোতে সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে কাপ্তাই হয়ে চট্টগ্রামে যাতাযাতের জন্য কাপ্তাই-রাঙামাটি রুটে নৌপথে লঞ্চ চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন ও লঞ্চ মালিক সমিতি। চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় খাদ্যসংকটে পড়ছে শহরবাসী। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। জ্বালানি তেলের সংকটে শহরে যাতায়াতের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম সিএনজিচালিত অটোরিকশাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে পড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top