সকল মেনু

সব দলের ভিশনই জনগণের কল্যাণ – সংসদে বক্তারা

হটনিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সকল শ্রেণী-পেশা মানুষের মধ্যে নানামুখী আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ এই রোডম্যাপকে স্বাগত জানালেও বিএপি বলেছে তারা নির্বাচনে যেতে চায় কিন্তু নির্বাচনের পূর্বেই আলোচনা হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকার কোন পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে। আর আওয়ামী লীগ বলছে নির্বাচন পদ্ধতির সমাধান সংবিধানে দেওয়া আছে। এরই মধ্যে কিছুদিন পূর্বে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছেন। বেগম জিয়ার এই ভিশন-২০৩০ কে বিশ্লেষকরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মনে করছেন। আবার ভিশন-২০৩০ কে সরকার ও তার জোট ইতিপূর্বে ঘোষিত আওয়ামী লীগের ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ থেকে নেওয়া বলে মন্তব্য করছেন। এমনি এক প্রেক্ষাপটে আজ রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিএনপি’র ভিশন-২০৩০ শীর্ষক এক ছায়া সংসদ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এবং বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে সংসদ ও সংবিধানই সর্বোচ্চ। সংবিধানেই সব নির্দেশনা দেওয়া আছে দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে, নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির নির্বাচনকালীন সরকার দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যার জন্য সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রবর্তন করতে হবে। ভিশন-২০৩০ প্রসঙ্গে তিনি বলেন এটি বাস্তবায়ন করতে হলে ক্ষমতায় যেতে হবে। তাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তবে ভিশন-২০৩০ আওয়ামী লীগের ভিশন ২০২১-এর অনুকরণ মাত্র। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিশন-২০৩০ তে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে যারা কাজ করেছে, তাদের বিচারের কথা উল্লেখ থাকা উচিত ছিল।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ভিশন-২০৩০ কে অনেকেই ফাপানো বেলুন হিসেবে উল্লেখ করে বলেছিলেন যে কয়েকদিন পর এটি চুপসে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। বিএনপি যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় নাও যায়, যারা ক্ষমতায় থাকবে তাদের তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান। ভিশন-২০৩০ তে সকলের মতামতের ভিত্তিতে একটি সামাজিক চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন রাষ্ট্রের চুড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। সেজন্য আগামী একাদশ নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয় তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র হচ্ছে যারা বেশি সমর্থন পাবে তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যারা বেশি সমর্থন পাবে তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে কি না। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। আমরা পরস্পরকে ভালবাসতে, শ্রদ্ধা করতে শিখি।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, যে কোন ভিশনই মানুষকে আশাবাদী করে। তাই জাতি আশায় বুক বেঁধে আছে কখন বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির পরিবর্তে সম্প্রীতির রাজনীতি জায়গা করে নেবে। সেই লক্ষ্যে বিএনপি’র ভিশন-২০৩০ কিংবা আওয়ামী লীগের ভিশন-২০২১ অথবা ২০৪১ যাই হোক না কেন সব ভিশনই বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলের কথা বলছে। তাই বলতে চাই সব দলের ভিশনই যাতে জনগণের কল্যাণে আসে। তবে আমাদের দেখতে হবে ক্ষমতায় যাবার পর যাতে এসব ভিশন বাস্তবায়িত হয়। তিনি বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন যখন দরজায় কড়া নাড়ছে তখন নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে প্রধান দুই দলের অবস্থান জাতিকে শংকিত করছে। বিএনপি বলছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না আর আওয়ামী লীগ বলছে নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে তার সমাধান সংবিধানে দেওয়া আছে। এই অবস্থায় উভয় পক্ষকেই আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক সমাধানে আসতে হবে আর তা না হলে সকল ভিশনই ব্যর্থ হবে।

অনুষ্ঠানে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি বিজয়ী হয়। বিচারক ছিলেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক আবু রইস এবং শিরিনা বিথী। প্রতিযোগীতা শেষে প্রতিযোগীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top