সকল মেনু

এসকে সিনহাই ভাস্কর্য স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

হটনিউজ ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত দেবি থেমিসের ভাস্কর্যটি নিয়ে বিতর্ক ওঠায় বৃহস্পতিবার বিকালে এটিকে সরিয়ে অন্য কোথাও পুনঃস্থাপনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার সময় বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি জানান,‘বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আমাকে ডেকেছিলেন। এসময় ড. কামাল হোসেন, খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ সুপ্রিম কোর্টের বারের বর্তমান ও সাবেক দায়িত্বশীলরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সামনের ভাস্কর্যকে কেন্দ্র করে আমি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা চাই না। এটি সরিয়ে নেওয়া হোক। এবং এমন জায়গায় স্থাপন করা হোক যেন প্রশ্ন না ওঠে ।’ অ্যাটর্নি জেনারেল আরও জানান, ‘এসময় সুপ্রিম কোর্টের সামন থেকে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে আমরা প্রধান বিচারপতিকে বলেছি।’ এরপরেই প্রধান বিচারপতি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত দেবী থেমিসের মূর্তি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। এসময় ভাস্কর মৃণাল হকের উপস্থিতিতে মোট ২০ জন শ্রমিক ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন। এটিকে জাতীয় ঈদগাহ থেকে দূরে অবস্থিত সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে স্থানান্তর করা হবে বলে জানা গেছে। ওই জায়গায় এটিকে পুনঃস্থাপনের জন্য এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।

২০১৬ সালের শেষ দিকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়। এরপর প্রায় দুই মাস এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কোনও মত প্রকাশ না হলেও ফেব্রুয়ারিতে মুখ খোলেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী। এক বিবৃতিতে তিনি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণের দাবি জানান।

এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের সবগুলো ধর্মভিত্তিক সংগঠন ভাস্কর্যটি সরানোর দাবিতে আন্দোলন করছিল। হেফাজতের ঘোষণা ছিল, অপসারণ করা না হলে শাপলা চত্বরে আবারও সমাবেশ করবে তারা।

এই ধারাবাহিকতায় গত ১১ এপ্রিল গণভবনে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সরকারি স্বীকৃতি ঘোষণার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই প্রশ্ন তোলেন গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য নিয়ে। সুপ্রীম কোর্ট চত্বরে এই গ্রিক দেবী থাকা উচিৎ না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পরবর্তীতে আরও কয়েকবার প্রশ্ন তোলেন ভাস্কর্যের বাস্তবতা নিয়ে। তার প্রশ্ন, গ্রিক দেবীর গায়ে শাড়ি কেন ?

বৃহস্পতিবার সকালেও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন রমজানের আগেই ভাস্কর্য সরাতে আহ্বান জানায়। এর আগে ইসলামী ঐক্যজোট হরতালের ঘোষণা দেয়-যে রমজানের আগে গ্রিক দেবী না সরালে তারা কঠোর কর্মসূচি দেবে। অব্যাহত হুমকি আসে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দল, আওয়ামী ওলামা লীগসহ সুন্নীপন্থী একাধিক সংগঠনের তরফে। যদিও ভাস্কর্য রক্ষার দাবিতে দেশের প্রগতিশীলদের একটি অংশ বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে আসছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top