সকল মেনু

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরও ফেসবুকে ব্যক্তিগত প্রচারে ব্যস্ত আ. লীগ নেতারা

মেহেদি হাসান, হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না অনেকেই। দলের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়রা নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেতে উঠেছেন ব্যক্তিগত প্রচারণায়। ফেসবুকের টাইমলাইনে কেউ পারিবারিক ছবি পোস্ট করছেন, কেউ পোস্ট করছেন টক শো’তে যাওয়ার খবর। কেউ আবার বিদেশ সফরের ছবি পোস্ট দিতেই ব্যস্ত। এসব নেতাদের ফেসবুক টাইমলাইনে দল ও সরকারের উন্নয়নচিত্র প্রচারে তেমন কোনও পোস্ট দেখা যায় না। এসব বিষয়ে সপ্তাহে একটি পোস্ট থাকলে ব্যক্তিগত পোস্টই থাকে ১০টি। সম্প্রতি সরকারদলীয় এমপি, মন্ত্রী ও নেতাদের ফেসবুক প্রোফাইল পর্যালোচনায় দেখা গেছে এমন চিত্র।

ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দল ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এর আওতায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা, এমপি-মন্ত্রীসহ সব স্তরের নেতাকর্মীরা। গত ৭ মে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় শিক্ষা, কৃষি, সামাজিক নিরপত্তা বেষ্টনী, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার কী কী করেছে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতে সবাইকে নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

একইদিন সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও এমপিদের কিভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবেন তা অবহিত করতে তিন দিনের এক কর্মশালার উদ্বোধন করেন। তিন দিনে দলের প্রায় দেড়শ সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে-কলমে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারের পদ্ধতি শেখান জয়। কর্মশালায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি পোস্ট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে এমপি ও অন্যান্য নেতাকর্মীরা তা আমলে নিচ্ছেন কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

কেন্দ্রীয় নেতা, এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ফেসবুক আইডিগুলো ঘুরে দেখা যায়, হাতেগোনা দুয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই আত্মপ্রচারে ব্যস্ত ফেসবুকে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা গেছে, ব্যক্তিজীবনের বিভিন্ন সময়ের ছবিই বেশি পোস্ট করা হয়েছে। এছাড়া কেউ কেউ দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নেতাদের সঙ্গে কিংবা বৈঠকের মুহূর্তের ছবিও পোস্ট করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের বাইরে মাঝারি সারির নেতারা আবার পোস্ট করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তোলা সেলফি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাদের এসব পোস্ট নিয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও কেউ কারও পোস্ট দেওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি। অনেক নেতা দাবি করেন, নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দেওয়া একেবারেই নিজস্ব ব্যাপার।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক  বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দল ও সরকারের উন্নয়ন নিয়ে পোস্ট দেওয়ার ঘটনা এখনও কম, এটা সত্য। তবে ধীরে ধীরে এটা বাড়বে। শীর্ষ পর্যায় থেকে প্রতিদিন সরকারের উন্নয়ন নিয়ে কমপক্ষে একটি পোস্ট দেওয়ার নির্দেশনার বাস্তবায়ন এখনও হয়ে উঠেনি।’

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘সরকারের ও দলের উন্নয়ন তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়া এক ধরনের প্রচার। আমাদের নেতাকর্মীরা এতে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন।’ তিনি বলেন, ‘অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভ্যস্ত নয়। এজন্যে এ মাধ্যমে প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও চিফ হুইফ আ স ম ফিরোজ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের প্রচারণা শুরু হয়েছে। এই প্রচার আরও বাড়বে।’ তিনি বলেন, এখনও সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেনি বলে প্রচারণা একটু কম।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top