সকল মেনু

জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে নেতৃত্ব দিতে হবে: ট্রাম্প

হটনিউজ ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ মুসলিমদের সঙ্গে নয়। এই যুদ্ধ হচ্ছে ভালো এবং মন্দের মধ্যে। ’ রবিবার বিকেলে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে কিং আব্দুল আজিজ কনভেনশন সেন্টারে আরব ইসলামিক আমেরিকান সম্মেলনে দেয়া ভাষণে ট্রাম্প একথা বলেন। এসময় তিনি মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের ইসলামি উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে আসা ও নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন ‘আপনাদের ধর্মীয় স্থানগুলো থেকে এদের উৎখাত করুন, পবিত্র ভূমি থেকে এদের নির্মূল করুন। এই পৃথিবী থেকে সন্ত্রাসবাদ সমূলে উপড়ে ফেলুন।’

সম্মেলনে দেয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বিভিন্ন ধর্মের, বিভিন্ন গোষ্ঠীর বা বিভিন্ন সভ্যতার নয়। এই লড়াই সেই সব নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা মানুষের জীবন কেড়ে নিতে চায়, সব ধর্মের ভালো মানুষ যারা জীবন রক্ষা করতে চায় তাদের হত্যা করতে চায় এসব অপরাধীরা। এই লড়াই শুভ এবং অশুভের।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘এর মানে হচ্ছে সত্যিকার অর্থে ইসলামি জঙ্গিবাদ ও ইসলামি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করা। এর মানে হচ্ছে নিরাপরাধ মুসলিমদের হত্যা, নারীদের ওপর নিপীড়ন, ইহুদিদের হত্যা ও খ্রিস্টানদের গলাকেটে হত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু শান্তির পথ এখানেই রয়েছে, এই প্রাচীন ও পবিত্র মাটিতে।’

উল্লেখ্য, দুই মাস আগে ক্ষমতাগ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছয়টি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সংশোধিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। শুরু থেকেই ট্রাম্পের এ আদেশকে পরোক্ষ মুসলিম নিষেধাজ্ঞা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ও একের পর এক মুসলিমবিরোধী বক্তব্য দিয়ে তুমুল সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এবার সেই ট্রাম্পই সৌদি আরব সফরে এসে ইসলাম ও মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশ্যে এই ভাষণ দিলেন।
জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে নেতৃত্ব দিতে হবে: ট্রাম্প
ট্রাম্প তার বক্তৃতায় আরো বলেন, ‘আমেরিকা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং সব সময় আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়া। আমরা এখানে লেকচার দিতে আসিনি, মানুষ কিভাবে বাঁচবে তা বলতে আসিনি এখানে। কী করতে হবে, কে করবে বা কিভাবে প্রার্থনা করতে হবে তা বলতে আসিনি। আমরা এখানে এসেছি অংশীদারিত্বের প্রস্তাব নিয়ে। যার ভিত্তি হবে পারস্পরিক স্বার্থ। যা সবার জন্য ভালো ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।’

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মন্দ শক্তিকে নিঃশেষ করতে পারি মাত্র একটি উপায়ে। আর তা হচ্ছে, আমরা সব ভালো শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী হই। আর এই মিলনায়তের সবাই যদি তাদের ন্যায়সঙ্গত কাজটা করে এবং তাদের দায় পরিপূর্ণভাবে মেটায়। শত্রুদের ধ্বংস করতে মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার জন্য অপেক্ষার প্রয়োজন নেই।’

জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, কিন্তু আমরা অশুভকে পরাজিত করতে পারব যদি সব মহৎ শক্তি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী থাকি। এই কক্ষে উপস্থিত সবাই যদি এই বোঝার ভাগ সমানভাবে বহন করি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উচিৎ নয় তাদের শত্রুদের ধ্বংস করার জন্য আমেরিকার শক্তির অপেক্ষায় থাকা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা দেশের, নিজেদের ও তাদের শিশুদের জন্য কেমন ভবিষ্যৎ চায়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ৫৬ আরব ও মুসলিম দেশের নেতারা এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর ট্রাম্পের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। এ সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ছাড়াও রয়েছেন জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। এছাড়াও বেশ কয়েকটি বড় মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির সিইও তার সঙ্গে আছেন। সৌদি সফর শেষে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, ব্রাসেলস, ভ্যাটিকান এবং সিসিলি সফরে যাবেন ট্রাম্প।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top