সকল মেনু

দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলা: তদন্তে ফাঁক রাখতে চায় না পুলিশ

 হটনিউজ ডেস্ক: ধর্ষণ মামলার সব আসা মিকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে প্রধান দুই আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ বৃহস্পতিবার দুপুরে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও আদালতে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণে আরও যেসব আলামত ও পরীক্ষা প্রয়োজন, তাও শেষ করতে চান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তারা এ মামলার তদন্তকাজে কোনও রকম ফাঁক রাখতে চান না বলে জানিয়েছেন।

তদন্তে সংশ্লিষ্টরা জানান, আসামিরা ধরা পড়ায় এখন মামলার তদন্তকাজ দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে। এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিই গ্রেফতারের পর তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতেও ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে তারা।

এদিকে, ঘটনাস্থল রেইনট্রি হোটেলের সিসিটিভির সার্ভার ও তরুণীদের পোশাক জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তারা জানান, এতে তদন্তের জন্য যেসব আলামত ও সাক্ষ্য প্রমাণের প্রয়োজন ছিল, তার সবই মোটামুটি তাদের হাতে রয়েছে। ধর্ষণের একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধানও পেয়েছেন তারা।

তদন্ত তদারকিতে থাকা একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আসামিও তাদের হাতে। অন্য তিন আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে হালিম, সাফাতের বডিগার্ড রহমত আলী ওরফে আজাদ ও গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেনের জবানবন্দি দেওয়ার পর আনুষঙ্গিক কিছু কাজ শেষে এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। রহমত আলী ও বিল্লাল ধর্ষণ ঘটনার আদ্যোপান্ত জানিয়েছে পুলিশকে। রিমান্ড শেষে তারাও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবে বলে জানিয়েছে।

তদন্তে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীর জবানবন্দি, এজাহারের পাশাপাশি ধর্ষণকারীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি তদন্ত কাজকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে। ঘটনাও প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও জব্দ করা আলামত, ধর্ষক ও ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীদের পরনের পোশাকের ফরেনসিক পরীক্ষা এবং তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টও মামলার জন্য জরুরি। পরবর্তী আইনি জটিলতা নিরসনে এগুলো কাজে লাগবে।

এ বিষয়ে আইনজীবী শাহিদুর রহমান বলেন, ‘কোনও আসামি যদি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তার অনুশোচনাবোধ থেকে আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করেও চার্জ গঠনের সময় অস্বীকার করেন, তখন রাষ্ট্রপক্ষকে তার অপরাধ প্রমাণের জন্য পারিপার্শ্বিক আলামতসহ অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে হয়।’

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধিতে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর মামলার তদন্ত অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কারণ তারা জেনে-বুঝেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’

এদিকে সর্বশেষ গ্রেফতার হওয়া নাঈম আশরাফ ওরফে হালিম পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সেই রাতের বিস্তারিত তথ্য দিলেও নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। নাঈম পুলিশকে বলেছে, সাফাত ও সাদমানের নির্দেশেই রেইনট্রি হোটেলে পার্টির আয়োজন করেছিল সে। তবে পার্টিতে আমন্ত্রিতদের হাজির করার বিনিময়ে সাফাতের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছে।

নাঈমকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তার কথা শুনে মনে হয়েছে, সে খুবই ধূর্ত। তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তারা আশা করছি, এরইমধ্যে তার কাছ থেকে সব তথ্য উদ্ধার করা যাবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top