সকল মেনু

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার আন্তরিক নয়

হটনিউজ ডেস্ক: টেকনাফের হ্ণীলা অনিবন্ধিত শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারারোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার আন্তরিক নয় বলে সফররত চীনের বিশেষ দূতকে জানিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দূত সান গোসিয়াং এর সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ে ইঙ্গিতে একথা বলেন। সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে চীনের বিশেষ দূত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসার আহ্বান জানালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আলোচনায় বসে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ঢাকা তাদেরকে অনেকবার অনুরোধ করেছে। কিন্তু তারা এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা চীনের প্রতিনিধিদলকে বলেছি, গত অক্টোবরে সীমান্তে রোহিঙ্গাদের নিয়ে গোলযোগ শুরু হবার পর থেকে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আলোচনার জন্য একাধিকবার মিয়ানমারকে অনুরোধ করেছে। এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু তারা তিন মাস পর গত জানুয়ারিতে বসতে রাজি হয় এবং দায়সারাভাবে বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া মিয়ানমার জাতিসংঘে অনেক দেশকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে চিঠি লিখেছে ।সে চিঠির কপি বাংলাদেশের কাছে আছে। যদিও গত ডিসেম্বরে চীন সীমান্তে একই ধরনের গোলযোগ হলে দুদিনের মধ্যেই চীন ও মিয়ানমারের দুজন জেনারেলের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ অক্টোবরের পর থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর হামলার কারণে ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এছাড়া আগে থেকেই তিন থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের বিশেষ দূতকে বলা হয়, গত জানুয়ারি মাসের বৈঠকে বাংলাদেশে নতুন করে আসা ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব করেছিল মিয়ানমার । কিন্তু বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে রাজি হয়নি তারা। সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা চীনের প্রতিনিধিকে বলেছি, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোই এ সমস্যার সমাধান নয় । বরং যে কারণে তারা পালিয়ে আসছে সেটি চিহ্নিত করতে হবে। তা নাহলে ফেরত পাঠানোর পরে তারা আবারও পালিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতির মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার (যা প্যাংলঙ কনফারেন্স নামে পরিচিত) বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এর জবাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখতে চায়। কিন্তু প্যাংলঙ কনফারেন্সে রোহিঙ্গাদেরকে পক্ষ করা হয়নি। ফলে সীমান্তের সমস্যা সমাধানে প্যাংলঙ কনফারেন্স কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ সন্দিহান।

আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা চীনের বিশেষ দূতকে কক্সবাজার পরিদর্শন করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি সেখানে যাবেন কিনা, এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলেননি।

চীনের বিশেষ দূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে চাই এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান আমরা চীনের কাছে তুলে ধরেছি। চীনের বিশেষ দূতও তাদের অবস্থান আমাদের কাছে ব্যাখা করেছেন।’

প্রসঙ্গত, সান গোসিয়াং-এর মার্চে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তখন না এসে তিনি সোমবার (২৪ এপ্রিল) তিন দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top