সকল মেনু

শহীদ জননীর সমাধি অযত্ন-অবহেলায়

হটনিউজ ডেস্ক: অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের কবর (ছবি- ইবনে নূর শাওন)তার নেতৃত্বে যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবি পরিণত হয়েছিল জনদাবিতে। তার নেতৃত্বেই ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল ১০১ সদস্যের একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। তিনি জাহানারা ইমাম, মুক্তিযুদ্ধে বড় ছেলে শফি ইমাম রুমীকে হারিয়ে যিনি হয়েছিলেন শহীদ জননী। অথচ সুরক্ষিত নেই মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার সমাধিটি। অযত্ন আর অবহলোয় পড়ে আছে তার কবর।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, ‘তিনিই (জাহানারা ইমাম) পাবলিক ডিমান্ড দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করেছেন। বিশেষ ট্রাইবুনাল করে বিচার সম্ভব, সেটা তিনিই দেখিয়েছেন। তার দেখানো পথ ধরেই আমরা এত বড় একটি বিচার কাজ সম্পাদন করছি। তার প্রতি ন্যূনতম সম্মানটুকু দেখাতে হলে তার স্মৃতিকে সম্মান করাটা জরুরি। আমি মনে করি, এটি কেবল তার পরিবারের নয়, জাতীয় দায়িত্ব।’
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থটি যেন মুক্তিযুদ্ধের চিত্রের এক প্রামাণ্য দলিল। মুক্তিযুদ্ধে তার বড় ছেলে শফি ইমাম রুমী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। সেই চিত্রও উঠে এসেছে এই বইয়ে। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন শহীদ জননী। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তিনি যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তা ততদিনে ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে।
যুদ্ধাপরাধে দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা গোলাম আযম ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির হলে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভের সূত্র ধরে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত হয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ জাহানারা ইমামের নেতৃত্বেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক ‘গণআদালতে’ গোলাম আযমের বিচার অনুষ্ঠিত হয়। ১২ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত ওই গণআদালতে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন জাহানারা ইমাম। তিনি গণআদালতের রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবিও তুলেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের অন্যতম পথিকৃৎ জাহানারা ইমামের কবর সংরক্ষণ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষণ করা হয় ১০ বছর পর্যন্ত। অন্য কবরগুলো দু’বছর পর্যন্ত দেখভাল করে সিটি করপোরেশন। বাকি সব কবর পারিবারিক উদ্যোগেই সংরক্ষণ করা হয়।’
শহীদ জননীর সমাধি সংরক্ষণ প্রসঙ্গে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির একজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বললে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম নেতা অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘কবর সংরক্ষণের বিষয়ে পরিবারেরও মতামতের বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে আমি নির্মূল কমিটির সঙ্গে কথ বলব।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top