সকল মেনু

উইকিলিকস ও অ্যাসাঞ্জ প্রশ্নে ট্রাম্পের অবস্থান আবারও বদল?

বিদেশ ডেস্ক: একের পর এক মার্কিন গোপন নথি ফাঁসকারী আলোচিত গণমাধ্যম উইকিলিকস এবং এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একেক সময় একেক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। মার্কিন নির্বাচনের দৌড়ে নামার আগে ২০১০ সালে উইকিলিকস সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আর নির্বাচনি প্রচারণায় নামার পর ২০১৬ সালে উইকিলকস প্রশ্নে তার কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল ইতিবাচক সুর। নির্বাচনের রেশ না কাটতেই এবার আবারও ট্রাম্পের সুর বদলের ইঙ্গিত দিয়েছে তার প্রশাসন। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয় ২০১০ সালে। মার্কিন কূটনৈতিক নথি ফাঁসের মধ্য দিয়ে উইকিলিকস উন্মোচন করে মার্কিন সাম্রাজ্যের নগ্নতাকে। দুনিয়াজুড়ে আলোচনায় আসেন ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রগুলোর গোপন তথ্য উন্মোচনের মধ্য দিয়ে দুনিয়াব্যাপী আধিপত্যবাদবিরোধী মানুষদের প্রতীকি কণ্ঠস্বরে পরিণত হন তিনি। একটি ধর্ষণ মামলা দিয়ে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০১২ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন অ্যাসাঞ্জ। মূলত ২০১০ সাল থেকেই অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

সেসময় বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি এটি অসম্মানজনক। আমি মনে করি এর জন্য মৃত্যুদণ্ড বা এ ধরনের কোনও সাজা দেওয়া উচিত।’

তবে ট্রাম্পের সেই ক্ষুব্ধ সুর নরম হয়ে যায় ২০১৬ সালের নির্বাচনের প্রচারণা চলার সময়। সেসময় ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন এবং ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির কিছু বিতর্কিত ইমেইল ও গোপন নথি ফাঁস করে উইকিলিকস। তখন আবার অ্যাসাঞ্জ প্রশ্নে চড়া সুর নরম করতে দেখা যায় ট্রাম্পকে। এক নির্বাচনি সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি উইকিলিকসকে ভালোবাসি’।

তবে উইকিলিকস ও অ্যাসাঞ্জ প্রশ্নে আবারও ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের সুর বদলের ইঙ্গিত মিলেছে।

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের ‘গ্রেফতারকে’ যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে প্রাধান্য দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস। অ্যাসাঞ্জ প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান কী হবে তা নিয়ে নানা বিতর্কের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) এ কথা জানান তিনি। মার্কিন কর্তৃপক্ষ অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মাথায় এমন ঘোষণা দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

বৃহস্পতিবার টেক্সাসের এল পাসোতে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস। সেসময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, অ্যাসাঞ্জকে চূড়ান্তভাবে গ্রেফতারকে মার্কিন বিচার বিভাগ প্রাধান্য দিচ্ছে কিনা। জবাবে সেসশনস বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রচেষ্টা জোরালো করতে যাচ্ছি এবং এরইমধ্যে সবগুলো ফাঁসের ঘটনায় আমরা পদক্ষেপ জোরালো করেছি। এটি এমন একটি ব্যাপার যা আমার জানাকেও ছাপিয়ে গেছে। অনেক বছর ধরেই আমরা যারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করছি, তারা এ ধরনের ফাঁসের ঘটনায় হতবাক হয়েছি। এগুলোর কিছু কিছু খুব মারাত্মক। সুতরাং হ্যাঁ, এটি আমাদের প্রাধান্য। এরইমধ্যে আমরা প্রচেষ্টা জোরালো করেছি এবং মামলা করা গেলে আমরা কতিপয় ব্যক্তিকে জেলে ঢোকাতে পারব।’

এর কয়েক ঘণ্টা আগে সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে সিএনএন জানিয়েছিল, প্রধম সংশোধনীর আওতায় বিদ্যমান বিচার প্রক্রিয়া থেকে অ্যাসাঞ্জকে রেহাই দেওয়া হবে কিনা সে প্রশ্নে প্রসিকিউটরদের মধ্যে বিতর্ক চলছি। অনেক বিতর্কের পর তারা পথ খুঁজে পেয়েছেন বলেও আভাস দিয়েছিল সিএনএন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top