সকল মেনু

‘এত নেতা পৃথিবীর কোনও দেশে বন্দনা হয় না’

হটনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর আর কোথাও নেতা-নেত্রীদের এত বন্দনা করা হয় না। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ দলিত পরিষদ আয়োজিত জাতীয় নীতি সংলাপে এ মন্তব্য করেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। আবেগতাড়িত হয়ে নেতা-নেত্রীদের বন্দনায় মেতে না ওঠার আহ্বান জানান তিনি।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘এ দেশের মানুষ এমন এক জাতি, যারা অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে নেতা-নেত্রীদের বন্দনা করে। পৃথিবীর কোনও দেশে এত নেতাবন্দনা কেউ করে না। আসলে নেতাবন্দনার কোনও কারণ এদেশের মতো আর কোথাও ঘটে না।’
দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহায়, দুস্থমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। দেশের দলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬৩ লাখ মানুষ দুস্থ। এ জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। স্বাধীনতার এত বছর পরও আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘আপনারা সংসদীয় ককাস গঠন করুন। আর আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের আগে মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করলে বিষয়টি আরও ফলপ্রসূ হবে।’
দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় ‘জাতীয় দলিত কমিশন’ গঠনের আহ্বান জানান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তবে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রসঙ্গে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন নিয়ে আমরা নিরাশ হয়েছি। আইনটি তড়িঘড়ি পাস করা হলো। যেন পায়ে বল আছে, মারার জন্য গোলটা হচ্ছে না। এতদিন দেরি করলাম, আরেকটু দেরি করতে পারতাম। বিধিও আমরা চাই, কিন্তু এজন্য দ্রুত যেতে চাই না। এজন্য জাতীয় স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ন না হয়।’

দলিত জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সংসদীয় ককাস গঠনের উদ্যোগ গ্রহণে ভূমিকা রাখার কথা জানিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘যে সংসদ সদস্যরা এখানে এসেছেন, তাদের নিয়ে বৈষম্য বিলোপ আইনের খসড়া দ্রুত সংসদে তোলার চেষ্টা করবো। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে একটি সংসদীয় ককাস গঠনের চেষ্টা থাকবে আমাদের।’

বাংলাদেশ দলিত পরিষদের উপদেষ্টা মিলন দাসের সভাপতিত্বে জাতীয় নীতি সংলাপে আরও বক্তব্য রেখেছেন সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, হোসনে আরা লুৎফা, রুস্তম আলী ফরাজি, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলিত পরিষদের সমন্বয়ক বিকাশ দাস। অনুষ্ঠানটির সহযোগিতায় ছিল মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top