সকল মেনু

বাংলাদেশের এবার লঙ্কা জয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে ?

ক্রীড়া ডেস্ক: বাংলাদেশের শততম টেস্ট। ভেন্যু কলম্বো, যেখানে বাংলাদেশের কোনও সুখস্মৃতি নেই। বরং একের পর এক ইনিংস হারের লজ্জা। মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে এমন একটি ভেন্যু হয়তো ভাবাচ্ছিল মুশফিক বাহিনীদের। একটু একটু চাপেও ছিল তারা। গলের মতো ভেন্যুতে ২৫৯ রানের ব্যবধানে হারের পর ‘অপয়া’ কলম্বোতে কতদূরই যাওয়া সম্ভব? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মনে। কিন্তু কলম্বোর সব বাজে অতীতকে মুছে ফেলে পি সারা ওভালের চতুর্থ দিন শেষে চালকের আসনে বাংলাদেশ।

শততম টেস্টে জয়ের হাতছানি পাচ্ছে মুশফিকরা। প্রথম ও দ্বিতীয় দিন শেষ বিকালে যা একটু বিপদের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। কিন্তু ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বেশিরভাগ ছিল তাদের হাতে।

প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে খাদের কিনারায় রেখেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। দিনেশ চান্ডিমাল না থাকলে লঙ্কানদের খাদেই পড়ে যেতে হতো। এ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ১৩৮ রানের সুবাদে ৩৩৮ রান করেছিল প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা। অথচ ১৯৫ রানেই ৭ উইকেট হারিয়েছিল তারা। সেখান থেকেই ধীরে সুস্থে এক ইনিংস খেলে শ্রীলঙ্কাকে টেনে তোলেন চান্ডিমাল।

স্বাগতিকদের তিন শতাধিক রানের ইনিংসের জবাবে ব্যাটিংয়েও দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ৯৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে বড় লিড নেওয়ার আভাস দিয়েছিল তারা। তামিম হাফসেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে থাকতে আউট হন। সৌম্য করেছিলেন টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। শ্রীলঙ্কার মাটিতে এ ওপেনারের এটি তিন ইনিংস খেলে সবগুলোতেই পেলেন পঞ্চাশের দেখা।

কিন্তু দ্বিতীয় দিন শেষ সেশনে আসেলা গুনারত্নের বোলিংয়ে কাবু হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৬ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল তারা। মাত্র ১৯৮ রানে ৫ উইকেট হারায় সফরকারীরা। সেখান থেকে তৃতীয় দিন দলকে টেনে তোলেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান।

দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ইনিংসের সুবাদে তৃতীয় দিন ভালো খেলেছিল তারা। মুশফিক হাফসেঞ্চুরি করে আউট হলেও সাকিবকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন অভিষেকে খেলতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন। শততম টেস্টে অভিষিক্ত হয়ে হাফসেঞ্চুরি করে সেরা ইনিংস খেলেন তিনি।

সাকিব (১১৬) ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে পান সেঞ্চুরি। একটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফসেঞ্চুরিতে ৪৬৭ রান করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১২৯ রানের লিড নেয়। এটাই বিদেশের মাটিতে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লিড। যার সুবাদেই চতুর্থ দিনও দাপট দেখাতে পেরেছে মুশফিকরা।

শ্রীলঙ্কাকে দ্বিতীয় ইনিংসে খুব বেশি সুবিধা করতে দেয়নি বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন প্রথম সেশনে উপুল থারাঙ্গার উইকেটই ছিল একমাত্র প্রাপ্তি। এর পর দ্বিতীয় সেশনে দৃঢ়চেতা লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেয় সাকিব ও মুস্তাফিজরা। সাকিবের ঘূর্ণি ও মুস্তাফিজের পেসে কিছু বুঝে উঠার আগে সাজঘরে যাওয়ার আসার মিছিলে যোগ দেয় স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে দিমুথ করুনারত্নের সেঞ্চুরি না হলে ব্যাটিং লজ্জার মুখেই পড়তে পারত লঙ্কানরা। শেষ পর্যন্ত তার ১২৬ রানের সুবাদে প্রতিরোধ গড়ে স্বাগতিকরা। শেষ বিকালে তাকে ফিরিয়ে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন সাকিব। ৮ উইকেটে ২৬৮ রানে চতুর্থ দিন শেষ করে তারা দিলরুয়ান পেরেরার প্রতিরোধে। এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার লিড খুব একটা আহামরি নয়, ১৩৯ রানের।

টেস্টের পঞ্চম দিন দ্রুত বাকি দুটি উইকেট ফেলে দিলে দারুণ হবে বাংলাদেশের জন্য। লক্ষ্যটা ১৭০ রানের মধ্যে বেধে ফেলার ইচ্ছা জানিয়েছে সফরকারীরা। সেই লক্ষ্যটা পূরণ হলে এবং তামিম-সৌম্যরা বুঝেশুনে খেললে ইতিহাসই গড়া হবে এ ঐতিহাসিক টেস্টে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top