সকল মেনু

ব্রিটিশ সরকার ব্রেক্সিটের শ্বেতপত্র প্রকাশ করলো

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি:  ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া (ব্রেক্সিট) সংক্রান্ত পরিকল্পনার বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সরকার। বৃহস্পতিবার এ শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়।

এ বিষয়ে বিষয়ে ব্রেক্সিট বিষয়কমন্ত্রী ডেভিড ডেভিস হাউস অব কমন্সে জানিয়েছেন, ‘গ্রেট রিপিল বিলের আগে সরকার আরেকটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে। এর মাধ্যমে ২৮টি দেশের অর্থনৈতিক জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসার অভিপ্রায়ের কথা জানানো হবে। ২০১৬ সালের জুনে এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন দেশটির নাগরিকরা।

তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিটেনের ভালো সময় এখনও আসেনি। ভালো কিছু করার জন্য আমরা একটি সমঝোতার দিকে এগোচ্ছি এবং সবার ভালোর জন্য কাজ করছি।’

বেক্সিটের ফলে ব্রিটেনের অধিবাসীদের অধিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডেভিড ডেভিস বলেন, ‘আমরা দেশবাসীকে ব্রিটেন থেকে বের করে দিচ্ছি না।’

জানা গেছে, প্রায় তিন মিলিয়ন ইউরোপিয়ান নাগরিক যুক্তরাজ্যে থাকতে পারবে কিনা সে বিষয়ে সন্দিহান রয়েছেন। যার মধ্যে দুই মিলিয়ন নাগরিক ইউরোপিয়ানভুক্ত অন্য দেশের নাগরিক।

শ্বেতপত্রে বেক্সিটের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের প্রকাশ করা ১২টি উদ্দেশ্যও উল্লেখ করা থাকবে। গত মাসে বিভিন্ন সময় এ উদ্দেশ্যগুলো জনগণকে জানানো হয়। তবে এটা নিশ্চিত যে বেক্সিট চূড়ান্ত করার আগে পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি পাসের জন্য তোলা হবে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ট্যারিফমুক্ত বাণিজ্য করার জন্য চেষ্টা করা হবে।

শ্বেতপত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পর বিশ্বব্যাপী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পূর্ণ সুবিধা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারও করা হয়েছে।

গত ১৭ জানুয়ারি ল্যাংকাস্টার হাউজে তেরেসা মের বক্তব্যের পর শ্বেতপত্র তৈরির কাজ শুরু হয়। ওই বক্তব্যে তেরেসা মে জানিয়েছিলেন, ‘‘ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে নতুন অংশীদারিত্ব এবং ‘শক্তিশালী, উত্তম ও বৈশ্বিক’ ব্রিটেন গঠনে আমরা কাজ করছি এবং যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করছি তা সম্পন্ন হবে।’’

তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ‘ অবশেষে সব বিভক্তি ও মতৈক্য ভুলে যুক্তরাজ্য এখন একীভূত হয়েছে। কারণ, আমরা শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবেই বিশ্বে পরিচিত। আমাদের রয়েছে বিশ্বের বৃহৎ ও শক্তিশালী অর্থনীতি, শক্তিশালী গোয়েন্দা বিভাগ, সাহসী সামরিক বাহিনী, কার্যকর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শক্তি। প্রতিটি মহাদেশে শক্তিশালী বন্ধুত্ব, অংশীদারিত্ব এবং মৈত্রী থাকায় এসব সম্ভব হয়েছে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যুক্তরাজ্য সরকার কী অর্জন করতে চায় তার একটি ‘পরিষ্কার লক্ষ্য’ রয়েছে এই শ্বেতপত্রে। বিলটিতে লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বুধবার রাতে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এই বিলটি ৪৯৮-১১৪ ভোটে পাস হয়েছে, যদিও লেবার পার্টির ৪৭ জন সদস্য এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টিউলিপ সিদ্দিকও রয়েছেন, যিনি ব্রেক্সিটের প্রতিবাদে ছায়ামন্ত্রীসভার সদস্যপদ ছেড়ে দিয়েছেন। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ট্রেড এনভয় (বিশেষ বাণিজ্যিক দূত) রুশনারা আলীও। তারাসহ এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে দল এখন কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।

আইনে পরিণত হওয়ার আগে ব্রেক্সিট বিলটি আরও বিতর্কের মুখোমুখি হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে হাউস অব কমনসের কমিটিতে বিলটি উত্থাপন করা হবে। সেসময় ব্রিটিশ এমপিরা বিলটি নিয়ে আরও আলোচনা করবেন এবং লেবার পার্টির সদস্যরা এতে আরও সংশোধনী আনতে চাইবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top