সকল মেনু

বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার শেষদিকে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে পড়েছে কেনাকাটার ধূম। উপচে পড়া ভিড়ে হাজার হাজার ক্রেতা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা। তারপরও আশাতীত বিক্রিতে তৃপ্ত তারা। মেলার প্রথম ২৫ দিনে ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট বাংলাদেশী ব্র্যান্ড ওয়ালটনের বিক্রি বেড়েছে গতবারের তুলনায় ৩২ শতাংশেরও বেশি। মেলা শেষে প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।
আজ শুক্রবার ছুটির দিনে বানিজ্য মেলা ছিলো লোকে লোকারণ্য। বিশেষ করে সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো ওয়ালটন। সবার ইচ্ছা একবার অন্তত ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে যেতে হবে। এর কারণ ব্যাক্ষা করলেন, মিরপুর থেকে আসা ক্রেতা তারেক আজিজ। তার মতে, ওয়ালটন বাংলাদেশী ব্র্যান্ড হলেও এটি এখন বহুজাতিক কোম্পানি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের বাজারে নতুন নতুন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিক্রিতে তারাই শীর্ষে। এজন্য সবার নজর থাকে ওয়ালটনে কি চমক আছে তা দেখার। কেনার ক্ষেত্রেও এখন মানুষের প্রথম পছন্দ ওয়ালটন।
এবিষয়ে ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, মেলায় সব সময় কিছু চমক নিয়ে আসে ওয়ালটন। এবার তারা এনেছেন ডিজিটাল টাচ বোর্ড। গতানুগতিক ব্ল্যাক বোর্ডের ধারণা পাল্টে দিয়েছে এই বোর্ড। এছাড়া ৩২ ইঞ্চি স্ক্রিনের এ্যান্ড্রয়েড ট্যাব বিনোদন জগতের সব এ্যাডভেঞ্চারকে টেক্কা দিয়েছে। এসেছে ডিজিটাল ডিসপ্লে, জায়ান্ট স্ক্রিনের টিভি। এর বাইরে এবারের মেলায় নতুন এসেছে ২২ মডেলের ওয়ালটন ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, এ্যালিভেটর বা লিফ্ট, অসংখ্য মডেলের অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর, এলইডি টিভি, এয়ারকন্ডিশনার, ইলেকট্রিক্যাল হোম ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্সেস। মেলায় ওয়ালটনের সেলফি কর্নার এবার ছিলো সেলফি প্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।
তিনি আরো জানান, মেলার উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন ঘুরে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ হাতে নিয়ে দেখেছেন। ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য ওয়ালটন পণ্যের প্রসংশা করেছেন। ওয়ালটনকে বাহবা দিয়েছেন। এর ফলে ওয়ালটনের প্রতি, বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স পণ্যের প্রতি সাধারণ মানুষের আকর্ষণ আরো বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, চলতি বানিজ্য মেলায় ৫ শতাধিক মডেলের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল পণ্য নিয়ে এসেছে ওয়ালটন। আছে শতাধিক মডেলের নতুন পণ্য। এর মধ্যে রয়েছে ২ মডেলের ল্যাপটপ; প্রিমো এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশীপ এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন ’এক্সফোর প্রো’ ছাড়াও ২০ টি নতুন মডেলের স্মার্টফোন; অত্যাধুনিক বিভিন্ন প্রযুক্তি ও ডিজাইনের বিশ্ব মানসম্পন্ন ১২টি নতুন মডেলের গ্লাস ডোর, ডিজিটাল ডিসপ্লে, সাইড সাইড সাইড, ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার, ব্যাচেলর, ফ্রস্ট ও নন ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর; ফুল এইচডি ও এলইডি টেলিভিশন, বেশকিছু নতুন মডেরলর এয়ারকন্ডিশনারসহ ডোনাট মেকার, স্যান্ডউইচ মেকার, ওয়াটার হিটার/গীজার, শরীরের ওজন মাপার যন্ত্র, ব্লেন্ডার, রাইসকুকার ইত্যাদি। এসেছে সিলড লেড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারী, এলইডি বাল্ব, এলইডি প্যানেল লাইট, ওয়াল মাউন্টেড এলইডি টিউব লাইট, ইলেকট্রিক স্যুইচ-সকেট, হোল্ডার, ফ্যান রেগুলেটরসহ অসংখ্য পণ্য।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা জানান, মেলায় ওয়ালটন পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১১২ মডেলের রেফ্রিজারেটর, ৯ মডেলের ডিপ ফ্রিজ, ৬৬ মডেলের এলইডি টিভি, ২২টি মডেলের ল্যাপটপ, প্রায় ৭০টি মডেল ও কালারের ট্যাব, স্মার্ট ও ফিচার ফোন, ১০ মডেলের এয়ার কন্ডিশনার, আয়রন, রিচার্জেবল পোর্টেবল ল্যাম্প ও টর্চ লাইট, ২৩ মডেলের রাইসকুকার, ৪৬ মডেলের এলইডি লাইট, ১৩ মডেলের জেনারেটর, ব্লেন্ডার ও ইলেকট্রিক কেটলি, ১৪ টি করে মডেলের কভার প্লেট মেটালিক ব্ল্যাক ও ইলেকট্রিক সুইচ, ৯ মডেলের কিচেন কুকওয়্যার, ১২ মডেলের সুইচ-সকেট, ৮টি মডেলের গ্যাস স্টোভ (এনজি ও এলপিজি), ৭ মডেলের মাইক্রোওয়েব ওভেন ও ওয়াল মাউন্টেড টিউব লাইট, ৬টি করে মডেল রয়েছে সিলড লেড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, সুইং মেশিন ও কভার প্লেট এর, ৫টি করে মডেলের ইলেকট্রিক ওভেন, রুম হিটার, ওয়াশিং মেশিন ও এলইডি টিউব লাইট, ৪ মডেলের অটো ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার, ওয়াটার পিউরিফায়ার, ইলেকট্রিক জাংশন বক্স ও এলইডি প্যানেল লাইট, ৩টি করে মডেলের ওয়াটার ডিসপেনসার, ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক, কেক মেকার, সিলিং ফ্যান, ২ মডেলের মাল্টি ক্বারি কুকার, ওয়াটার হিটার/গীজার, হেয়ার স্ট্রেইনার, শরীরের ওজন মাপার যন্ত্র, রুটি মেকার, এয়ার কুলার, প্রেসার কুকার, দেয়াল ফ্যান, রিচার্জেবল ফ্যান ও হোল্ডার। এছাড়া রয়েছে ১টি করে মডেলের অটোমেটিক ভোল্টেজ প্রোটেকটর, ইলেকট্রিক লাঞ্চ বক্স, হেয়ার ড্রায়ার, প্রাইস কম্পিউটিং ওয়েট মেশিন, মপ সেট, ভেজিট্যাবল (সালাদ) মেকার, স্যান্ডউইচ মেকার, ডোনাট পেলেট এক্সেসরিজ, কফি মেকার, টোস্টার, এয়ার ফ্রায়ার, ফ্যান রেগুলেটর ও পাওয়ার ব্যাংক।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিক্রির ধূম পড়েছে। প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের শামাল দিতে হিমশি খেতে হচ্ছে তাদের। দেখার চেয়ে এখন কেনার লোকই বেশি। তিনি জানান, গত বছরের চেয়ে এবার তাদের বিক্রি বেড়েছে আশাতিত। গত বছরের মেলায় তারা ৭ কোটি ৮২ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছিলেন। তাদের প্রত্যাশা এবার ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েকবছর ধরে মেলায় প্যাভিলিয়ন ও ভ্যাট প্রদানে প্রথম পুরষ্কার পেয়ে এসেছে ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক (পিআর এ্যান্ড মিডিয়া) হুমায়ুন কবীর জানান, এবারো তারা ওই দুটি ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরষ্কার লাভের ব্যাপারে আশাবাদি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top