সকল মেনু

আগামী ৩০ জানুয়ারির আগে বাড়ছে না ইন্টারনেটের গতি !

 হটনিউজ ডেস্ক: ২০ জানুয়ারির মধ্যে ইন্টারনেটের স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার কথা হলেও ৩০ জানুয়ারির আগে পুরোপুরি ঠিক হচ্ছে না বলে জানা গেছে। ঝড়ের কবলে পড়ে ভারতের সাবমেরিন ক্যাবল আইটুআই এলোমেলো হওয়ার পর থেকে এখনও তার মেরামত কাজ শেষ হয়নি। ফলে আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল)  মাধ্যমে ভারতে থেকে ‘আমদানি নির্ভর’ ব্যান্ডউইথের সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। চাহিদার তুলনায় ব্যান্ডউইথ সরবরাহ কম হওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে দেশে।

জানতে চাইলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক  হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘২০ জানুয়ারি ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। যদিও আইটুআই আমাদের জানায়নি, ২০ তারিখে ইন্টারনেট স্বাভাবিক হবে, নাকি আগের গতিই থাকবে। যেহেতু তারা আমাদের জানায়নি, তাই আমরা ধরে নিয়েছি ইন্টারনেট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না।’ আরও সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে এমদাদুল হক বলেন, ‘৩০ জানুয়ারির আগে মেরামত কাজ শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না।’

আইএসপিএবি সূত্রে জানা গেছে, আইটিসি নির্ভর ব্যান্ডউইথের সরবরাহ না থাকায় আইএসপিগুলো বিকল্প হিসেবে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু ব্যান্ডউইথের মান ভালো না হওয়ায় ইন্টারনেটের গতি, প্রকৃতি ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে এমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা বিএসসিসিএল থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই ব্যান্ডউইথের মান খারাপ হওয়ায় তা সেভাবে কাজে আসছে না।’ ‘নিম্নমানের’ বিষয়টির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএসসিসিএল থেকে আমরা যে ব্যান্ডউইথ নিচ্ছি, তা অনেক পথ ঘুরে, বিভিন্ন পয়েন্ট পার হয়ে আসার ফলে ব্যান্ডউইথের মান ঠিক থাকছে না। এ কারণে আমরাও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছি না। ’

আইএসপিএবি বলছে, দেশে দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০০ গিগা (জিবিবিএস) অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ১২০ গিগা বিএসসিসিএল (বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড) এবং ২৮০ গিগা ব্যান্ডউইথ আইটিসির মাধ্যমে ভারত থেকে আসে।

কিছু দিন আগে ভারতের ওপর দিয়ে প্রলয়ঙ্করী ঝড় বয়ে যায়। সেই ঝড়ে ভারতের সাবমেরিন ক্যাবল আইটুআই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আইটুআই নামের ওই সাবমেরিন ক্যাবল সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যুক্ত। চেন্নাইয়ের সমুদ্রতীর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ক্যাবলটি ঝড়ের কবলে কাটা পড়ায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাত ২টা থেকে তা অকেজো হয়ে যায়। টাটা ইনডিকম ক্যাবল নামে আরও একটি সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারত যুক্ত রয়েছে। ৩ হাজার ১৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ক্যাবলটি ভারতের চেন্নাই ও সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এলাকার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। ওই ক্যাবলটিও অকেজো হয়ে পড়ে।

এছাড়া ইন্ডিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ আরেকটি ফাইবার অপটিক ক্যাবল দিয়ে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্য দিয়ে ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত। এই ক্যাবলটিও এখন অকেজো। যে কারণে কোনও আইটিসির মাধ্যমে দেশ ব্যান্ডউইথ না আসায় দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে ধীরগতি পাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশ দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ পাওয়া না পর্যন্ত ইন্টারনেটে এ ধরনের সমস্যা থেকেই যাবে। আইটিসি সংযোগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত ধারণা করা হতো দেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবলের বিকল্প আসা না পর্যন্ত মাঝে মাঝে রিপিটার মেরামত, ক্যাবল কাটা পড়ার মতো ঘটনায় ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতো। ওই সময় বলা হয়েছে, আইটিসি সংযোগ চালু হলে ইন্টারনেটের সমস্যা আর থাকবে না। কিন্তু সম্প্রতি ভারতের সাবমেরিন ক্যাবলে সমস্যা হওয়ায় আইটিসির মাধ্যমেও ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না। ফলে আবারও দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top