সকল মেনু

নাসরিনকে মুমূর্ষু অবস্থা দেখে পরিবার লাপাত্তা!

সাভার প্রতিনিধি: সাভারের এনাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন নাসরিনকে কুপিয়ে আহত করার তিনদিন পর তার বাবা আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকে আর নাসরিনের বাবা বা তার পরিবারের কাউকে  খুঁজে পাচ্ছে না আশুলিয়া থানা পুলিশ। এদিকে স্বামী আবির একদিন মেডিক্যালে উঁকি দিয়েই আর আসেননি। তার সেলফোনও বন্ধ রয়েছে। পুলিশ বলছে, মামলার বিষয়ে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করতে গিয়ে নাসরিনদের জুরাইনের ঠিকানায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে এনাম মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সুমন নামে একজন তাকে ভর্তি করে দিয়ে আর আসেননি। তার দেওয়া সেল নম্বরটিতেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের ধারণা, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সদ্য বিবাহিত নাসরিনকে কুপিয়েছে রাসেল নামে এক ব্যক্তি। নাসরিন রাসেলের অধীনে দিনমজুরের কাজ করতেন।

নাসরিনকে এনাম মেডিক্যালে কে ভর্তি করেছে, এমন প্রশ্নে প্রথমে কিছুই জানাতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১৫ মিনিটে সুমন নামের এক ব্যক্তি আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাসরিনকে উদ্ধার করে এনাম মেডিক্যালে ভর্তি করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে আইসিউতে ভর্তি করে। প্রায় ৭দিন আইসিইউতে থাকার পর স্থানান্তর করা হয় সাধারণ ওয়ার্ডে। এ বিষযে সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইলফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে নাসরিন যেখানে থাকতেন, সেই ধামসোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য সাদেক মিয়া হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘নাসরিন ঢাকার জুরাইন এলাকা থেকে গত দুই মাস আগে ভাদাইল এলাকার রাজিয়ার বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন। এরপর গত ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখে রাসেল নামের এক ব্যক্তি ওই বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তাকে কুপিয়ে জখম করে।’

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রুহুল আমিন হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘নাসরিন জুরাইন এলাকায় রাসেল নামের এক রাজমিস্ত্রীর অধীনে হেলপারের কাজ করতেন। মাত্র কয়েকমাস আগে আবির নামের এক যুবককে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে নাসরিনের সঙ্গে রাজমিস্ত্রী রাসেলের বিরোধ শুরু হয়। রাসেল বার বার বিয়ের প্রস্তাব দিলেও তিনি রাসেলকে বিয়ে না করে আবিরকে বিয়ে করায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়ে থাকতে পারে।’

কয়েকমাস আগে নাসরিন যাকে বিয়ে করেছেন, সেই আবির একবার এনাম মেডিক্যালে এসেছিলেন বলে জানা যায়। এরপর থেকে তার মোবাইলে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি কোথায় আছেন,  সে বিষয়ে কেউ ধারণা দিতে পারেননি। বাবা-মা, স্বামী কেউই এমন একজন আহত ব্যক্তিকে ফেলে রেখে আর দেখা করতে না আসার বিষয়টিকে মোটেই স্বাভাবিক মনে করছেন না তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘রাসেলকে ধরার সব চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তাকে দ্রুত ধরতে সক্ষম হব। ঘটনার পর থেকে সে এলাকাছাড়া।’

এদিকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. তানভিন কামাল হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘ভর্তির পর নাসরিনকে ৭দিন আইসিইউতে রাখা হয়। গত দেড় মাসে নাসরিনের ৬টি অপারেশন করা হয়েছে। আরও একটি অপারেশন দরকার তার।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, পরের অপারেশনটির জন্য নাসরিনের পরিবারের সদস্যদেরর সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার পরও যদি তার পরিবারের সদস্য যোগাযোগ না করে, তাহলে নিজ দায়িত্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নাসরিনের অপারেশন করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top