সকল মেনু

ঐকমত্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর : রাষ্ট্রপতি

21071c992ecb27e49fc14159a8737aa8হটনিউজ ডেস্ক: রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের মাধ্যমে গণতন্ত্র সামনের দিকে এগিয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য প্রয়োজন।’ মঙ্গলবার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে তরিকত ফেডারেশন ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) প্রতিনিধি দলের পৃথক পৃথক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন বলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিনের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা বাসস এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানায়।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বলেন, বিটিএফ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের নিয়ে সার্চ কমিটি ও ইসি গঠনের জন্য ১৭ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে। অন্যদিকে বিজেপি সার্চ কমিটি ও নতুন ইসি গঠনের জন্য ৫ দফা এবং ইসিকে শক্তিশালী করতে ৯ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে।

বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সুচিন্তিত মত ও প্রস্তাব দেওয়ার জন্য তরিকত ফেডারেশনের প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অভিমত ও প্রস্তাবের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ইসি গঠন সম্ভব হবে। রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার বিকাল ৩ টার কিছু পর, বঙ্গভবনে তখন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে কেবল আলোচনা শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বৈঠক শুরু হওয়ার প্রায় ৭-৮ মিনিট পার হচ্ছে, এই অবস্থায় ভূমিকম্প টের পান বঙ্গভবনে কর্মকর্তাসহ বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারাও। এ অবস্থায় উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও বৈঠকে অংশ নেওয়া তরিকতের নেতারা চলে আসেন বঙ্গভবনের সামনের চত্বরে।

নির্বাচন কমিশন গঠন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে আয়োজিত সংলাপে গিয়ে মঙ্গলবারের অভিজ্ঞতার জানান তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি। তিনি বলেন, বৈঠকের মাত্র ৭-৮ মিনিটের মধ্যেই এ ঘটনা। ভূমিকম্প হলে কর্মকর্তারাই মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বাইরে আসেন। আমরাও তাদের সঙ্গে ভবনের সামনের অংশ চলে আসি। তবে কোনও ধরনের বিপদ হয়নি। বাইরেও সাত-আট মিনিট অবস্থান করে দরবার হলে বৈঠকের বাকি অংশ সম্পন্ন হয়।

c2d7b1a6fe63bf517507d9e2556e013e-586c1734b47f5
তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ (পিআইডি)

তরিকতের ১৯ দফা

নির্বাচন কমিশন গঠন, সার্চ কমিটি ও ইসি শক্তিশালীকরণে ১৯ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বসর মাইজভান্ডারীর নেতৃত্ব প্রতিনিধি দলে দলের মহাসচিব এম এ আউয়ালসহ প্রেসিডিয়ামের ১০ জন সদস্য ছিলেন। প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতিকে কয়েকটি বিষয়ে জোর দেয় তরিকত ফেডারেশন।

দলীয় মহাসচিব এম এ আউয়াল বলেন, ‘আমরা ১৯টি প্রস্তাব দিয়েছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সার্চ কমিচি ও নির্বাচন কমিশনে মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী লোকদের নিয়োগ দিতে হবে। একইসঙ্গে পরিচ্ছন্ন ও দলনিরপেক্ষ সাংবাদিক বা কবিও আসতে পারেন কমিটিতে।’  তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতি নিজেও আনন্দিত হয়েছেন। তিনি সন্তুষ্ট একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও। এছাড়া আমাদের প্রস্তাব অনেক পরিষ্কার বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

943d40dcba1891f713bb3430afd01b40-586c175ad4517
বিজেপির সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ (পিআইডি)

বিজেপি চায় ৯ সদস্যের নির্বাচন কমিশন

২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি আইন করে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা সম্ভব না বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করে। দলটি মনে করে, রাষ্ট্রের জনগণ, গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের ধ্যানধারণায় পরিবর্তন আনতে হবে।
মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপশেষে দলটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের সদস্য ৫ থেকে ৯ সদস্যবিশিষ্ট করতে প্রস্তাব করেছি।’  তিনি বলেন, ‘সারাদেশে ভোটারসংখ্যা বেড়েছে, এখন সাড়ে ১১ কোটির ওপরে। এ কারণে প্রত্যেক বিভাগের পৃথক পৃথক দায়িত্ব দিয়ে ৮জন কমিশনার ও একজন প্রধান কমিশনার নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।’

বিজেপি প্রস্তাবে আরেকটি বিশেষ জোর দেয় ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ও সেটি পর্যবেক্ষণ করতে একটি কমিটি গঠন করতে। আন্দালিভ রহমান বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে সিটি ক্যামেরা থাকলে অন্তত ৫০ শতাংশ কারচুপি কমে যাবে।’

এছাড়া সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশনে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি রাখার পক্ষে মত দিয়েছে বিজেপি।

উল্লেখ্য, বিকাল পৌনে চারটার দিকে আন্দালিভ রহমান পার্থ ও তার দলের সদস্যরা পায়ে হেঁটেই বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। দলীয় একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকালে রাজউকভবনের সামনে তীব্র জ্যাম থাকায় তারা পায়ে হেঁটে রাষ্ট্রপতিভবনের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনার মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন ইসি গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেন। কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি’র মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top