সকল মেনু

আশুলিয়ার আন্দোলনরত কারখানার সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি

1ca82ceb64ca217ff74e5eb40c7a86de-58590af0167d1হটনিউজ২৪বিডি.কম : আশুলিয়ার আন্দোলনরত কারখানার সংখ্যা নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রী তিন ধরনের তথ্য দিয়েছেন। আর তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ দিয়েছে আরেকটি তথ্য। সব মিলিয়ে কারখানা বন্ধের চার ধরনের তথ্য। ফলে আসলে কতটা কারখানায় আন্দোলন হচ্ছে তার সঠিক সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এরইমধ্যে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) আশুলিয়ায় ৫৫টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু জরুরি প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, আশুলিয়ার ৪০টি কারখানার শ্রমিকরা সরকারকে কোনও কিছু না জানিয়েই কর্মবিরতি পালন করছেন।

এর আগে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বড়দনি ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘প্রথম দিকে আশুলিয়ার ৩৯টি কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করলেও এই মুহূর্ত পর্যন্ত (সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টা) ২০টি কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।’

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আশুলিয়ায় আসলে কতটি কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন? কাজেই আন্দোলনরত কোন কোন কারাখাগুলোর শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন সেটি নিশ্চিত হতে না পারলে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া জটিল হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার আন্দোলনরত শ্রমিকদের অবিলম্বে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী। একইসঙ্গে কারখানা মালিকদের উদ্দেশে বলেছেন, শ্রমিকরা এই মুহূর্তে কাজে যোগ না দিলে বিদ্যমান শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা মোতবেক কারখানার মালিকরা কারখানা বন্ধ ঘোষণা করতে পারবেন। আর যদি এই অবস্থায় কারখানা বন্ধ করা হয়, তাহলে শ্রমিকরা বেতন ভাতা কিছুই পাবেন না।

শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তার দেখানো পথেই গার্মেন্টস কারখানার মালিকরা চলমান শ্রমিক বিক্ষোভরে মুখেই সাভারের আশুলিয়ায় ৫৫টি গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলেন। কারখানা মালিকরা বিদ্যমান শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী কারখানা বন্ধ করছেনে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

প্রসঙ্গত, পোশাক শ্রমিকরা ন্যুনতম মজুরি বাড়ানো, বার্ষিক ছুটির বিপরীতে এবং চাকরির বয়স পাঁচ বছর হলে বছরে একটি করে মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছে বলে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হলেও শ্রম প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘শ্রমিক নেতা হিসেবে পরিচিত বাবুল আক্তার, নাজমা আক্তার এবং আমিনুল ইসলাম আমিনসহ সব কারখানার নেতারা আমাদের জানিয়েছেন আশুলিয়ায় কর্মরত শ্রমিকদের বিক্ষেভের বিষয়ে তাদের কিছুই জানা নেই। আশুলিয়ায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের কোনও দাবির বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। কোন দাবিতে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন তাদরেকে লিখিত বা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানায়নি।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ৫৪৩টি ট্রেড ইউনয়িন থেকে কোনও প্রকার দাবি সম্বলিত লিখিত বা মৌখিক কোনও কিছুই আমাদের জানানো হয়নি। কাজেই এ আন্দোলন বা বিক্ষোভ অযৌক্তিক, বেআইনি ও অনৈতিক। তারা কিসের দাবিতে আন্দোলন করছে তা কারখানার মালিক, সরকার এবং ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা কেউই জানেন না।’

তিনি আরও বলেন, দেশের রফতানি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করতে তৈরি পোশাক খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা চক্রান্ত করছে বলে সরকার আশঙ্কা করছে। সরকার তার নিজস্ব গোয়ন্দো সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে এই চক্রান্তকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও যে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য, যা যা করা প্রয়োজন সরকার তা করবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজ না করলে কারখানা খুলে রেখে লাভ কি? উৎপাদন তো ব্যাহত হচ্ছে। খোলা রাখলে কারখানার সম্পদও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এ ছাড়াও শ্রমিকরা কাজ না করলে তাদেরকে বেতনভাতাও দেওয়া সম্ভব হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top