সকল মেনু

অমিত হত্যা মামলায় দুই জনের ফাঁসি, একজনের যাবজ্জীবন

bf6836866c90ca5b5604f9fd6be00564হটনিউজ২৪বিডি.কম : বেসরকারি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থী (বিবিএ) অমিত সাহা (২০) হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড ও অপর আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন চার বছর আগের এ মামলায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিহত আমিত সাহার বন্ধু আশফাক আহমেদ শিহাব ও আল আমিন ইসলাম পিন্টু এবং যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া আসামি হলেন মো. রুহুল আমিন রুবেল। এছাড়াও রুহুল আমিনকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একবছর কারাদণ্ড দিয়েছেন অদালত। তিনি পিপলস ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এবং আশফাক আহমেদ আইডিয়াল ইনস্টিটিউশন অব সায়েন্স টেকনোলজির শিক্ষার্থী ছিলেন।

এছাড়াও আদালত দণ্ড পাওয়া তিন আসামিকে দণ্ডবিধির ৩৯৪/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৪১১/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

২০১২ সালের ২১ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীর সি ব্লকের ১৫ নম্বর সড়কের ২ নম্বর বাড়ির চার তলায় ভাড়া বাসায় প্রতিবেশী বন্ধু আশফাক ও তার বন্ধুদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন অমিত সাহা। আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অমিতকে নেতাজাতীয় জুস খাইয়ে গলা বন্ধনী দিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে ল্যাপটপ, ট্যাব এবং স্বার্ণালঙ্কারসহ প্রায় নয় লাখ টাকার মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অমিতের বাবা রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ী শ্যামল চন্দ্র ভুঁইয়া পরদিন তিন জনকে অভিযুক্ত করে পল্লবী থানায় মামলা করেন।

মমালা তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার এএসআই শেখ মতিয়ার রহমান ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২৪ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ২২ জন সাক্ষির মধ্যে ২১ জনের সাক্ষি গ্রহণ করা হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘তিন অক্ষরের ‘বন্ধু শব্দটি’র অর্থ, যে কিনা শত্রু নয় এবং যার ওপর বিশ্বাস রাখা যায়। বন্ধুত্ব হলো মমত্ব, আনুগত্য, ভালোবাসা, পারষ্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও গভীর বিশ্বাসের মিশ্রণ। বন্ধুত্বের মধ্যে লোভ লালসা থাকবে কেন? কি অপরাধ ছিল অমিত সাহার ও তার পরিবারের? বন্ধু নির্বাচনই কি তার অপরাধ ছিল? নাকি তার পরিবারের ভুল ছিল বন্ধু নামের শত্রুদের সঙ্গে অমিতকে মিশতে দেওয়া? বন্ধু নির্বাচন কখনও ভুল হবে না যদি বন্ধুটির মাঝে মানবিক গুণাবলী ও মূল্যবোধ থাকে। যদি বন্ধুর মাঝে লোভ লালসা বাসা বেধে না থাকে তবে এক বন্ধু অন্য বন্ধুর জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে সেই বন্ধুত্ব নাই বা হোক। নিহত অমিত বন্ধুদের দ্বারা নৃশংসভাবে হত্যা বন্ধুত্ব শব্দটিকে কলঙ্কিত করেছে। বন্ধুর মধ্যে থাকবে না কোনও লোভ লালসা, থাকবে মমত্ব, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। সেই চরিত্রের বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিরাপদ থাকা যায়। পরিবার নিশ্চিত হতে পারে তাদের ছেলে বা মেয়েটির বা অন্যান্যদের বন্ধুসঙ্গ নিয়ে। মামলার আসামিরা বন্ধুত্বের পরিচয়ে যে নৃশংস ঘটনার অবতারণা করেছে তার পুনরাবৃত্তি না হোক আদালত তা কামনা করে। সে কারণে আসামিদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া যুক্তি সংগত। এতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আদালত মনে করেন।’

নিহত অমিত সাহার বাবা শ্যামল চন্দ্র ভুঁইয়া হটনিউজ২৪বিডিকে জানান, ‘আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। কিন্তু সব আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে আরও খুশি হতাম। এখন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top