সকল মেনু

কাতারে শ্রমিকদের ‘কাফালা’ ব্যবস্থার অবসান

d838fe31c2d28d604f68623058066b1a-584fa99513a35আন্তর্জাতিক ॥ হটনিউজ২৪বিডি.কম : বিদেশি শ্রমিকদের স্পন্সরশিপ-এর আওতায় রেখে নিয়োগ দেওয়া এবং কাজ করানোর বিতর্কিত ও ‘দাসত্বমূলক’ পদ্ধতি ‘কাফালা ব্যবস্থার’ বিলোপ করার ঘোষণা দিয়েছে কাতার। কাফালা ব্যবস্থার পরিবর্তে শ্রমিকদের জন্য অধিকতর নমনীয়তা ও সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখে মঙ্গলবার থেকে চুক্তিভিত্তিক নতুন ব্যবস্থা কার্যকরের কথা বলা হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নতুন আইনে স্পন্সরশিপ শব্দটি বাতিল হলেও পুরনো ব্যবস্থার সবটা বাতিল হচ্ছে না। নতুন ব্যবস্থার মধ্যেও আধুনিক দাসত্ব বজায় রয়েছে। উল্লেখ্য, কাতারে সব বিদেশী শ্রমিকের নিয়ন্ত্রক তার কাফিল বা স্পন্সর তথা নিয়োগদাতা। কাফালা ব্যবস্থার আওতায় শ্রমিকরা নিয়োগদাতার অনুমতি ছাড়া কিছু করতে পারে না। অন্য কোথাও ভাল চাকরির সুযোগ পেলে কিংবা দেশ ছাড়তে চাইলেও কাফিলের অনুমতি ছাড়া তা সম্ভব হয় না। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ কাতারে এখন প্রচুর অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে যেখানে হাজার হাজার নির্মাণ শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ভয়াবহ কর্ম পরিবেশের কারণে অনেকে মারা গেছেন। চলতি বছরের শুরুর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করেছিল, বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য শ্রমিকদের জোরপূর্বক কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়া দেশটির কাফালা ব্যবস্থা নিয়ে বরাবরই সমালোচনা রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে কাফালা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেয় কাতার। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে সামনে রেখে এটি দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রম সংস্কার বলে মনে করা হচ্ছে। কাতারের শ্রম আইন সংস্কার করে, কাফালা পদ্ধতির পরিবর্তে এখন থেকে যে ব্যবস্থা চালু থাকবে তার আওতায় সকল নিয়োগ হবে চুক্তিভিত্তিক। এছাড়া চাকরি পরিবর্তন করতে চাইলে, নতুন আইন অনুযায়ী এখন থেকে সেটি আর অসম্ভব নয়।বর্তমান কাফিলের সাথে চুক্তি শেষ হলে কিংবা এক প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর কাজ পর একজন শ্রমিক চাইলে অন্যত্র কাজ করতে পারবেন। তবে, এক্ষেত্রে কাফিলের অনুমতির প্রয়োজন হবে। তবে, নতুন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একজন শ্রমিককে বর্তমান নিয়োগকারীর অনুমতি ছাড়াই নিয়োগ দিতে পারবেন।কাতারের শ্রম অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রমিক কাফিল বা স্পন্সর পরিবর্তন করতে পারবেন।

কাতারের শ্রমমন্ত্রী ইসা বিন সাদ আল জাফালি কাফালা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে জানান, মঙ্গলবার থেকে নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে। তিনি বলেন, ‘কাফালা ব্যবস্থার জায়গায় নতুন যে পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে তা আধুনিক ও চুক্তিভিত্তিক এবং এটি কাতারে নিয়োজিত বিদেশি শ্রমিকদের অধিকারের সুরক্ষা দেবে।’

তবে তা মানতে রাজি নন মানবাধিকারকর্মীরা। তাদের নতুন ব্যবস্থায় খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনও পরিবর্তন আসেনি। অ্যামনেস্টির জেমস লিঞ্চ বলেন, ‘এ নতুন বিধানটি স্পন্সরশিপ শব্দটি থেকে মুক্তি দিলেও দুই বিধানের মৌলিক জায়গাগুলো একই।’ মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, নতুন আইনের আওতায়ও বিদেশি শ্রমিকদেরকে নিয়োগকর্তার অনুমতি নিতে হবে। সূত্র: বিবিসি, জাপান টাইমস

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top