সকল মেনু

বিজয় দিবসে হাতিরঝিলে নামছে ওয়াটার ট্যাক্সি

5fe7729f51491b2daa79d7c5c683f13c-584a42c549eabহটনিউজ২৪বিডি.কম : বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে হাতিরঝিলে । ঢাকাবাসীর মুক্ত বাতাসের আধার বলে পরিচিত এ ঝিলের পানিতে এবার ওয়াটার ট্যাক্সি নামছে। বর্তমানে সড়ক বেষ্টনী ধরে ঝিলটির চারপাশে ঘুরে বেড়ানো যায়, ওয়াটার ট্যাক্সি চালু হলে ভ্রমণ করা যাবে ঝিলের পানিতেও। শুধু এতেই শেষ নয়, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এই ঝিলে চালু হচ্ছে ফাউন্টেন। তখন বাজনার তালে তালে আলো ও পানির নাচন দেখতে পাবেন ঝিলে বেড়াতে আসা দর্শকরা।

এক সময় ছিল যখন দুর্গন্ধময় হাতিরঝিল দেখলেই মুখ ফিরিয়ে নিত ঢাকাবাসী। সে অবস্থায় ২০০৭ সালে সমন্বিত প্রকল্পের মাধ্যমে শুরু হয় এর উন্নয়ন। ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাতিরঝিল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এরপরেই ঢাকাবাসীর জীবনে যোগ হয় এই দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো।

চার বছরে হাতিরঝিলের সড়কপাড়ের গাছগাছালি বড় হয়ে উঠেছে। প্রখর রোদে ছায়া দিচ্ছে এসব গাছ। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বিনোদন স্পট হিসেবে হাতিরঝিলের আকর্ষণ।কয়েক মাস আগে জিলের এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত ঘুরে ঘুরে দেখার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস নামানো হয়েছে।এ অবস্থাতেই এবার ঝিলে নামছে ওয়াটার ট্যাক্সি। ইতিমধ্যে এগুলোর পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। এখন আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পালা।

‘আশা করছি আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে চারটি ওয়াটার ট্যাক্সি চালু করতে পারব। এর ফলে হাতিরঝিলে আসা বিনোদনপ্রেমীদের জন্য নতুন মাত্রা যোগ হবে। এর পাশাপাশি হাতিরঝিল সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষও স্বচ্ছন্দে চলাচল করতে পারবেন’- কথাগুলো বললেন হাতিরঝিল সমন্বিত প্রকল্পের পরিচালক ও রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জামাল আক্তার ভূঁইয়া।

তিনি জানান, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো কিনে এনেছে। ওই প্রতিষ্ঠানই এগুলো পরিচালনা করবে। এর বিনিময়ে প্রতিটি ট্যাক্সি বাবদ প্রকল্পের ফান্ডে তারা দেবে মাসে ৫০ হাজার টাকা। মোট ছয়টি ওয়াটার ট্যাক্সি নামবে। এগুলো থেকে প্রতি মাসে পাওয়া যাবে তিন লাখ টাকা। প্রতিটি ওয়াটার ট্যাক্সির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ২০-২৫ জন। জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হবে ২৫-৩০ টাকা। তবে এ ভাড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

জানা গেছে, মগবাজার-তেজগাঁও সড়কের পাশে হাতিরঝিলের প্রথম ব্রিজ (ভায়াডাক্ট) থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো দু’টি রুটে চলাচল করবে। একটি রুট হবে পুলিশ প্লাজা হয়ে, আরেকটি মগবাজার হয়ে। পরে এই সার্ভিস গুলশান ও বারিধারা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হতে পারে। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই ট্যাক্সি চলবে। চাহিদা বাড়লে ও হাতিরঝিলের আলোকায়নের কাজ সম্পন্ন হলে এ সার্ভিস রাত দশটা পর্যন্ত পরিচালনা করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, ওয়াটার ট্যাক্সি ছাড়াও হাতিরঝিলের দ্বীপে ফাউন্টেন তৈরি করা হচ্ছে। প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় ডিসেম্বরে এটা চালু করা যাচ্ছে না। এ জন্য এক–দুই মাস লাগতে পারে। এ ছাড়া গুলশান-নিকেতন মুক্তমঞ্চ নির্মাণের কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ মঞ্চের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এখানে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন প্রায় দুই হাজার দর্শক।

তিনি জানান, হাতির ঝিলকে ঘিরে আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এরমধ্যে রয়েছে মুক্তমঞ্চের কাছে দশতলা বিশিষ্ট আধুনিক গাড়ি পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। এ ভবনে থাকবে একটি সম্মেলন কেন্দ্র যেখানে লোকজন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবেন। আরও থাকবে হাতিরঝিল পরিচালনা অফিস, জাদুঘর ও রেস্টুরেন্ট।

জানা গেছে, হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ব্যয় নির্ধারণ ছিল ১৪৭১ কোটি টাকা। পরে এটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৭১ কোটিতে। এরপর আরও বেড়ে হয় ২২০৫ কোটি টাকা। এ বছর প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেটা সম্ভব হয়নি। বরং ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো প্রস্তাব করা হয়েছে। রাজউকের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ ইসিবি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top