হটনিউজ২৪বিডি.কম : ‘৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সকাল ও দুপুরে পাকিস্তানের নবম ডিভিশনের সঙ্গে ভারতীয় নবম পদাতিক ও চতুর্থ মাউন্টেন ডিভিশনের প্রচণ্ড লড়াই হয়। বিকালেই হানাদার বাহিনী বুঝতে পারে যশোর দূর্গ কোনোভাবেই রক্ষা করা সম্ভব নয়। পরে নিজের ব্রিগেড নিয়ে রাতের আঁধারে গোপনে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে তারা পালিয়ে যান খুলনার দিকে। ৬ ডিসেম্বর এভাবেই একাত্তরে প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা হওয়ার গৌরব অর্জন করে যশোর।
যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বিতীয় শক্তিশালী দূর্গ। অবস্থানগত কারণে এটির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। মূলত জগন্নাথপুরের ভয়াবহ যুদ্ধের পরই হানাদার বাহিনীর চৌগাছা ঘাঁটির পতন হয়। ভেঙে যায় তাদের মনোবল। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের চরম আঘাতে পাকিস্তানি সেনারা যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে পালিয়ে যায় খুলনা ও মাগুরার দিকে।
যশোর হানাদারমুক্ত হওয়ার পর থেকেই দ্রুত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল মুক্ত হতে থাকে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর ছিল ৮ নম্বর সেক্টরে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর মঞ্জুর। তার অধীনে ছিলেন ক্যাপ্টেন আবু ওসমান চৌধুরী ও ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা। এই ফ্রন্টেই ৫ সেপ্টেম্বর প্রাণ উৎসর্গ করেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ।
‘৭১ সালের ২০ নভেম্বর জগন্নাথপুরের যুদ্ধটি মুক্তিযুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট ছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ এই যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরই পাকিস্তানিদের মনোবল চুরমার হয়ে যায়।
৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পতন ঘটে যশোর ক্যান্টনমেন্টের। দেশের প্রথম জেলা শহর হিসেবে শত্রুসেনামুক্ত হয় যশোর। আর এদিনই ভারত স্বীকৃতি জানায় স্বাধীন বাংলাদেশকে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার রাজেক আহমেদ বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর যশোরবাসীর জন্যে গৌরবের দিন। এদিন যশোর শহরসহ বেশ কিছু এলাকা হানাদার মুক্ত হয়।’
গৌরবময় দিনটি পালনে যশোর জেলা প্রশাসন কর্মসূচি নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড যৌথভাবে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের বকুলতলায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে গিয়ে শেষ হবে।
যশোর মুক্ত দিবসে পৌরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শহরের বিভিন্ন ভবন ও রাস্তায় আলোকসজ্জা করেছে যশোর পৌরসভা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।