সকল মেনু

সংসদে বিমানমন্ত্রীর বিবৃতি: প্রধানমন্ত্রীর বিমানে ত্রুটি মনুষ্যসৃষ্ট

fb78efc83a4819edb5c1ada5f3f8277cহটনিউজ২৪বিডি.কম : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের তেলের চাপ কমে যাওয়ার পেছনে মনুষ্যসৃষ্ট (হিউম্যান ফ্যাক্টর) কারণ ছিল বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

রবিবার সংসদের ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘এ ত্রুটির জন্য কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অবহেলা নাকি নাশকতা দায়ী, তা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়োজিত এজেন্সিগুলো খতিয়ে দেখছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তার নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই।’

৩০০ বিধিতে মন্ত্রী বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি, জরুরী অবতরণ ও পূর্বাপর সব পদক্ষেপ সংসদে তুলে ধরেন।

ঘটনায় গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বেসামরিক মন্ত্রী বলেন, ‘ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমি তাৎক্ষণিক সামগ্রিক বিষয়টি মনিটরিং শুরু করি এবং মন্ত্রণালয় হতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে অনতিবিলম্বে কাজ শুরুর নির্দেশ দেই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি. ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অধীনেও দু’টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ নভেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ৪ ডিসেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া গেছে। উভয় কমিটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অয়েল সেন্সরের পাশে অবস্থিত অয়েল বি-নাট (B-nut) ঢিলের কারণে অয়েল লিকেজ ঘটে। যার কারণে অয়েল প্রেসার কমতে থাকে।’

মেনন বলেন, ‘এয়ারক্রাফটের ক্ষেত্রে এ ধরণের ত্রুটি কিংবা নিরাপত্তার ঝুঁকির সিৃষ্টি হলে তিনটি ফ্যাক্টরকে ভিত্তি করে তদন্ত পরিচালিত হয়। এগুলো হলো- ম্যাকানিকাল/টেকনিক্যাল ফ্যাক্টর, এনভায়রনেমেন্টাল ফ্যাক্টর এবং হিউম্যঅন ফ্যাক্টর (ইনএফিসিয়েন্সি-ল্যাক অফ প্রফেশানালিজম অথবা ইনটেনশনাল অথবা ক্যালাসনেস। আর এ ক্ষেত্রে তৃতীয় অর্থাৎ হিউম্যান ফ্যাক্টরটি বিমানের বর্ণিত ফ্লাইটের ত্রুটির জন্য দায়ী বলে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতীয়মান রয়েছে। এটি দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের অবহলো নাকি নাশকতা তা নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট এজেন্সি খতিয়ে দেখছে।’

এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রাথমিক রিপোর্ট অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রার পূর্বে এই এয়ার ক্র্যাফেটটি ইন্সপেকশনের সময় যে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছিল তার রেক্টিফিকেশরে জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ৬ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এবং বিভিণ্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট ও দৃশ্যমান আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

মন্ত্রী লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ‘গত ২৬ নভেম্বর এয়ারক্রাফটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করার পরই ভিভিআইপি ফ্লাইটের ইন্সপেকশন শুরু হয়। ইন্সপেকশনের সময় গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার একটি ‘স্ট্যাটাস মেসেজ’ পান যাতে উল্লেখ ছিল ‘অয়েল প্রেশার সেনসর (লেফট)’। এই মেসেজ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় র‌্যাক্টিফিকেশন ওয়ার্ক সম্পাদন করা হয়। ভিভিআইপি ফ্লাইট যখন লাহোর এলাকা অতিক্রম করছিল তখন পাইলটের দৃষ্টিগোচের আসে যে, এয়ারক্রাফটের বামদিকের ইঞ্জিনের অয়েল প্রেসার কমে আসছে তবে ডানদিকের ইঞ্জিনের মতোই স্বাভাবিক কর্মক্ষম ছিল। কাবুল অতিক্রম করার সময় ডান দিকের ইঞ্জিনের চেয়ে বামদিকের ইঞ্জিনের অয়েল প্রেশার দৃশ্যমানভাবে কমে যাচ্ছিলো। এ সময়ে বামদিকের ইঞ্জিনের অয়েল প্রেশার ছিল ৩০ পিএসআই ডানদিকের ছিলো ৬০ পিএসআই। এসওপি অনুসারে তাৎক্ষণিকভাবে পাইলট ঢাকা সদরদফতরে যোগাযোগ করে নিকটবর্তী তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাতে জরুরি অবতরণ করে। অবতরণের সময় অয়েল প্রেসার ছিল ২৪ পিএসআই।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনোরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন করার সুযাগ নেই এবং ভবিষ্যতে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি আরও সচেতনার সঙ্গে নিশ্চিত করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top