সকল মেনু

আ. লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধের’ অভিযোগ আরেক নেতার

6f0aeadb839eec582e896e9a0530cb64-5842324132162হটনিউজ২৪বিডি.কম : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় সোমবার (২৮ নভেম্বর) নেত্রকোনা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মতিউর রহমান খানের বিরুদ্ধে হত্যা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে আবেদন দাখিল করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা মো. শামছুজ্জোহা। একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের এক সহযোগীসহ অন্তত দুজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ বলে অভিহিত করেছেন মতিয়র রহমান খান।

বৃহস্পতিবার রাতে হটনিউজ২৪বিডিকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে মতিয়র রহমান খান বলেন, ‘আমার ওপর জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও বিশ্বাসের কারণে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে শামসুজ্জোহা এ অভিযোগ করেছেন। সেইসঙ্গে দলের ও সভানেত্রীর ভাবমূর্তি নষ্টের উদ্দেশ্যেও তিনি এমন বানোয়াট ভিত্তিহীন অভিযোগ দাখিল করেছেন।’

জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান এ সভাপতি বলেন, ‘অভিযোগকারী শামসুজ্জোহা এক সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পরে দলীয় সভানেত্রীকে কটাক্ষ করে কথা বলায় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সে সময় আমি আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি থাকায় আমাকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নেত্রকোনা জেলা পরিষদের প্রশাসক নিযুক্ত করেছেন। সেইসঙ্গে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন।’

এদিকে ট্রাইবুন্যালের তদন্ত সংস্থায় আবেদনের বিষয়ে মো. শামসুজ্জোহা হটনিউজ২৪বিডিকে বলেন, ‘১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, আমি তাদের বিরুদ্ধেই ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছি। ট্রাইবুন্যাল তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’ আবেদনের সঙ্গে তিনি একাত্তরে শান্তি কমিটির একটি সভার ‘প্রতিবেদনের অনুলিপি’জমা দিয়েছেন, যেখানে সভায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতিউর রহমান খানের নাম রয়েছে।

এদিকে অভিযোগ দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান হটনিউজ২৪বিডিকে বলেন, ‘এ ধরনের একটা অভিযোগ এসেছে। তবে আমরা তদন্তে নামিনি। আর এটা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কিনা সেটা বিবেচনা করারও বিষয় আছে। কারণ অভিযোগ এসেছে অব্যাহতি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে। তবে বিষয়টির সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা, প্রাথমিক তদন্তের আগে সে ব্যাপারে কিছু বলার নেই।’

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ‘এমন একটি অভিযোগ আন্তর্জাতিক ট্রাইবুানালে দাখিল করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। তবে সত্য-মিথ্যা ট্রাইবুন্যাল তদন্ত করার পর জানা যাবে।’

নেত্রকোনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, ‘এটা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। মতিউর রহমান খান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি। উনি রাজাকার ছিলেন কিনা আমি তা জানি না। তিনি পারিপার্শ্বিক কারণে মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারেননি।’

হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, ‘একাত্তরে মতিউর রহমানের পিতা, ভাই ও অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে পাক বাহিনী ধরে নিয়ে গিয়েছিল। এ কারণেই তিনি সে সময় পাকিস্তানী মিলিটারিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন বলে জানি। তিনি স্বাধীনতা বিরোধী কোনও জড়িত ছিলেন কিনা, তা আমার জানা নেই।এলাকার প্রবীণরা হয়তো বলতে পারবেন।’

নেত্রকোনা জেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার নুরুল আমিন বলেন, ‘তৎকালীন সময় মতিউর রহমান ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়রা মুসলিম লীগ করতো। পরবর্তীতে তিনি আত্মসমর্পণ করেছিলেন বলে আমি শুনেছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top