সকল মেনু

ডিজিটাল বাকৃবি’র বেহাল দশা

c0716fdd04f91b8311bfd0d41545777f-5813355680beeহটনিউজ২৪বিডি.কম : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়েও চলতে পারছে না দক্ষিণ এশিয়ার কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বত্র ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় আনলেও ব্যবহার উপযোগী না হওয়ায় ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট সংযোগ বিড়ম্বনায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ডিজিটাল যুগে মানসম্মত ইন্টারনেট সংযোগ না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ আর হতাশা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালের জুন মাসে শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র ফাইবার ক্যাবল ও ওয়াই-ফাই সিস্টেম স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ হয় পরের বছরের মাঝামাঝিতে। কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে একটি করে রাউটার স্থাপন করা হয় যা কিছুদিনের মধ্যেই অপ্রতুল বলে অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে হল প্রভোস্টদের উদ্যোগে ছেলেদের হলে অতিরিক্ত ১২ টি রাউটার যুক্ত করা হয়। সাময়িকভাবে সমস্যার সমাধান হলেও পরবর্তীতে শুরু হয় নতুন সমস্যা। বারবার নেটওয়ার্ক কানেকশন বন্ধ হয়ে যাওয়া, টানা ২-৩ দিন ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা, সমস্যা সমাধানে বিলম্বসহ বেশকিছু অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা।

মেয়েদের ৪টি হলে পরবর্তীকালে নতুন কোন রাউটার যুক্ত না করায় বেশিই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ছাত্রীরা। নবনির্মিত ছাত্রীদের বেগম রোকেয়া হলের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, হলের ওয়াই-ফাই দিয়ে কোনো কাজ হয় না। তাই মোবাইল কোম্পানির ইন্টারনেট ক্রয় করে ব্যবহার করছি। কিন্তু নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে সেটাও ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারছি না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে ৩৮ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তা ৩০১ এমবিপিএস। সরকারি ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী বিটিসিএল এর পরিবর্তে তৃতীয় একটি মাধ্যম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনিক কম্পিউটারের কাছ থেকে কেনা হচ্ছে। কিন্তু ওই অনিক কম্পিউটার নিজেই ব্যান্ডউইথ কিনছে অন্য একটি ব্যান্ডউইথ কোম্পানির নিকট হতে। যার ফলে প্রতি এমবিপিএসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে গুনতে হচ্ছে ৬৫০ টাকা। এদিকে ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রতিটি স্নাতক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সেমিস্টার প্রতি ১২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি কেউ যদি ওয়াইফাই নাও ব্যবহার করতে পারে, তাকেও গুনতে হচ্ছে সমপরিমাণ অর্থ। অথচ নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে ব্রডব্যান্ড নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদেরকেও দেওয়া হচ্ছে না ইন্টারনেট সংযোগ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ব্যান্ডউইথ দিয়ে সর্বমোট ৭০০৮টি ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুরো কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলে একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রয়েছে মাত্র ৬ টেকনিশিয়ান। এদের মধ্যে ৫ জন কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টাররোলভূক্ত কর্মচারী হিসেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি হল, অফিস, আবাসিক শিক্ষকের বাসায় সংযোগ প্রদান ও মেরামতের কাজ তদারকি করেন। জনবল কম হওয়ায় তারা সার্বক্ষণিক সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানায় আইসিটি সেলে কর্মরত ব্যক্তিরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট ও বিভিন্ন শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বই ডাউনলোড করা কিংবা ই-মেইল পাঠানোর সময় বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয়। এ কাজের জন্য আমাকে শেষ পর্যন্ত মোবাইল কোম্পানির চড়া মূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ ক্রয় করতে হচ্ছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়কেও প্রতি সেমিস্টারে ১২০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top