সকল মেনু

জেনে নিন নারকেলের কিছু গুণ

l-s-7_46067হটনিউজ২৪বিডি.কম : বাঙালির পূজার মৌসুমে নারকেল দিয়ে তৈরি নানা মিষ্টি থাকবেই। কখনো নারকেল নাড়ু আবার কখনো নারকেলের তৈরি সন্দেশ। নারকেল আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো, জানালেন অতীনস’র প্রফেসর ডা. অতীন ব্যানার্জি।

অনেকেই মনে করেন নারকেল ফল হলেও তেল থাকায় তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। আমরা নারকেল গাছকে ট্রি অব লাইফ বলি। এর খাদ্যগুণ যেমন বেশি সে রকমই চিকিৎসাশাস্ত্রে এর অবদান অনন্য। সাবেকি ও আয়ুর্বেদিক মেডিসিনে সারা পৃথিবী বিখ্যাত। একটি নারকেলের ৭টি অংশ থেকে আমরা নানাভাবে উপকৃত হই। ১) ডাব বা নারকেলের জল, ২) ডাবের নরম ও পাতলা শাঁস, ৩) শক্ত নারকেল, ৪) নারকেল তেল, ৫) নারকেলের দুধ ৬) নারকেলের আটা ও ৭) নারকেলের ফোঁপল।
প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্র চড়ক সংহিতাতেও নারকেলের গুণ রয়েছে। শুধু মানুষ নয়, যে কোনো প্রাণীর চিকিৎসায়, বিশেষত পুরানো রোগের চিকিৎসায় অব্যর্থ। এবার দেখে নেয়া যাক নারকেল কী কী ভাবে আমাদের রোগমুক্ত থাকতে সাহায্য করে।

* ত্বকের অসুখে, ত্বকের র‌্যাশে বিশেষত বয়স্ক এবং বাচ্চাদের র‌্যাশে, অ্যাকনে, ত্বকের ইনফেকশনে, চুলকানি, হারপিস, এগজিমা, ঝুলে যাওয়া ত্বককে টান টান ও মসৃণ করে নারকেল তেল। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে নারকেল তেল ও দুধ। ত্বকের যে কোনো ক্ষত সারাতে, পুঁজ দূর করে ক্ষত শুকোতে সাহায্য করে। ত্বকের জ্বালায়, সোরিওসিসের ক্ষেত্রেও খুব উপকারী।
* চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে নারকেল তেল। মাথায় খুশকি, শুষ্কতা দূর করে চুল পড়া বন্ধ করে নারকেল তেল। এ ছাড়া গর্ভবতী থাকাকালীন পেটে নারকেল তেল নিয়মিত লাগালে স্ট্রেচ মার্ক আসে না। এক্ষেত্রে গর্ভবতী হওয়ার শুরু থেকেই পেটে তেল লাগাতে হবে।
* বদ হজমের ক্ষেত্রে বা যে কোনো পেটের রোগে নারকেলের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক বেশি। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে পিত্তঘটিত যে কোনো রোগের নিরাময়ে প্রথম সারিতে রাখা হয়েছে নারকেলকে। যে কোনো গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যায়, পেট ফোলা ও ফাঁপায়, গ্যাস্ট্রিক আলসারে, গ্যাস্ট্রোরাইটিস, পানি থেকে হওয়া পেটের রোগ সারিয়ে তোলে নারেকেল। টেপ ওয়ার্ম, রিং ওয়ার্ম অর্থাৎ কৃমি নষ্ট করে নারেকেল। অন্ত্রে ভিটামিন মিনারেল অ্যামিউনো অ্যাসিড অ্যাবজরভ করে। পুরানো আমাশা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলস ও ফিসচুলার মতো রোগ প্রতিরোধ করে।
* অগ্ন্যাশয়কে ভাল রাখতে ও মধুমেহ রোধ করতে নারকেল উপকারী। রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে নারকেলের ভূমিকা যথেষ্ট। ইনস্যুলিন বেড়ে গেলে আমাদের লোহিত রক্তকণিকার ওপরের ভাগে গ্লুকোজের আস্তরণ থেকে যায়। সুগার বেড়ে যায়। পেট, থাই, কোমরের চর্বি বাড়ে।

* এনজাইম বা উৎসেচকের কার্যকারিতা বাড়ায় নারকেল। প্যাংক্রিয়াটাইটিসের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী। মধুমেহ রোগীদের খাওয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, মধুমেহ রোগীরা খাবার খাচ্ছেন। কিন্তু পুষ্টি নিতে পারছেন না। তাই ক্রমশ রোগা হয়ে যাচ্ছেন। নারকেল খাবারের পুষ্টিগুণকে রক্তে মেশাতে সাহায্য করে। * হাড়ের রোগে নারকেলের দুধ বেশ উপকারী। হাড়ে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। অস্ট্রিওপোরেসিস, অস্ট্রিও আর্থারাইটিস, যে কোনো হাড়সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় অব্যর্থ নারকেল। ব্যথা কমে।

* রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ায়। এইচআইভি, এইডস, প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা, ইউরিনাল ট্র্যাকে ইনফেকশন, ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেসে এই ফলটি কাজ দেয়। ফাঙ্গাল ইনফেকশনে খুব উপকারী। নারকেল তেল নিয়মিত লাগালে এই ধরনের সমস্যা থাকে না।
* রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে হার্টের সমস্যা দূর করে নারকেল।
* লিভারের অসুখের ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস সি, জন্ডিস ও অন্যান্য লিভারের অসুখে বেশ ভালো কাজ দেয় নারকেলের দুধ।
* যে কোনো দাঁতের রোগ, মাড়ির সমস্যা, ক্যাভিটিজ ও স্কারভিতে নারকেল কোরা দিয়ে দাঁত মাজলে উপকার হয়।
* কেটোজনিক ডায়েট চার্ট করলে ওজন কমে। এই বিশেষ ডায়েট চার্টের প্রধান উপকরণ নারকেল। তবে কেটোজনিক ডায়েটে অনেক রকম নিয়ম মেনে চলতে হয়। মিষ্টি ও চিনি একেবারেই খাওয়া চলে না। ভাত, রুটিও খাওয়া যায় না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই ডায়েট নেওয়া উচিত। এই ডায়েট মেনে চললে সপ্তাহে তিন কেজি পর্যন্ত ওজন কমতে পারে।

হাইপো থাইরয়েড রোগীদের ওজন কমাতে সাহায্য করে কেটোজনিক ডায়েট। পুরুষ, মহিলা, শিশু এবং ওজন ও উচ্চতার ওপর এই ডায়েটের চার্ট নির্ভর করে। যে কোনও ফলের পরিবর্তে ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top