সকল মেনু

রাজবাড়ীতে হতদরিদ্রের চাল সচ্ছলদের ঘরে

02b1008701aeb8ada5da6a006a0de5cc-581c239d7eec6হটনিউজ২৪বিডি.কম : রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চাল নিয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও নেতা-কর্মীরা।এতে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত দুস্থ ও হতদরিদ্ররা। চাল নিয়ে কারসাজির অভিযোগে বঞ্চিতরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা দাবি জানিয়েছে, তাদের ন্যায্য কার্ড ফিরিয়ে দেবার।

জানা গেছে, ৯নং ওয়ার্ডের বাঘুটিয়া গ্রামে ১০টাকা কেজি চালের কার্ড পেয়েছে এলাকার সচ্ছল ব্যক্তিরা।এমনকি একই পরিবারের একাধিক সদস্যদের নামে এই কার্ড রয়েছে। এলাকার বাঘুটিয়া বাইতুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুস সালাম ও তার স্ত্রী রূপালী বেগম দুজনের নামেই রয়েছে কার্ড।এছারাও একই গ্রামের সচ্ছল ব্যক্তি হানিফ আলি মৃদ্ধা যার বসত বাড়িটি ৪৫ শতাংশ জমির ওপরে তিনি ও তার ছেলে বাবলু দুজনই মাদ্রাসার নাম ভাঙিয়ে নিয়েছেন ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড।এমন অনেক সচ্ছল ব্যাক্তিদের লোভ ও কারসাজির কারণে বঞ্চিত হয়েছে গ্রামের হতদরিদ্ররা।

৯নং ওয়ার্ডের ১১৮টি কার্ডের মধ্যে বেশিরভাগই গিয়েছে সচ্ছল ব্যক্তিদের হাতে।এলাকার কাউন্সিলর (মেম্বার) আরব আলী সেখের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন অসহায় অসচ্ছল মানুষেরা।

৯নং ওয়ার্ডের বিধবা তারা বিবি (৬০) জানান, তিনি অন্যের জমিতে ছাপরা ঘড় করে থাকেন।পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অনেক দিন আগেই মারা গেছেন।এখন বড় অসহায়ভাবে তিনি খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন।সরকারের দেয়া ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড তিনি পাননি।মেম্বারের কাছে অনেকবার চেয়েও চালের কার্ড মেলেনি।কিন্তু এলাকায় যারা সচ্ছল তারা ঠিকই কার্ড পেয়েছে।

৭০ বছরের বৃদ্ধ গোলাপ মণ্ডল জানান, তিনি বর্তমানে অচল হয়ে পরেছেন।তার আয়ের কোনও পথই নেই। তবুও বঞ্চিত হয়েছেন নায্য মূল্যের ১০ টাকার চাল থেকে।

এলাকার বাঘুটিয়া বাইতুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুস সালামের প্রতিবেশী পারভীন বেগম জানান, মাদ্রাসার শিক্ষক সচ্ছল ব্যাক্তি হওয়া সত্বেও নিজে ও স্ত্রীর নামে দুটি কার্ড নিয়েছেন।সাহায্য করেছেন অন্যদের কার্ড নিতে। এলাকার মেম্বার মো. আরব আলি সেখ দলের পক্ষপাতি করে চালের কার্ড বিতরণ করেছেন। এর ফলে বঞ্চিত হয়েছে অসহায় দুস্থ মানুষ।

বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নে বাঘুটিয়া বাইতুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুস সালাম জানান, কার্ড দিয়ে যে চাল পাওয়া গেছে তা দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের খোরাকি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শিবানন্দ দাস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাশেদুল বিশ্বাস বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এলাকার মধ্যে সরকারের দেওয়া ১০টাকা কেজি চালের কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কার্ড বিতরণ কমিটি তাদের পছন্দমত ব্যাক্তিদেরকে কার্ড দিয়েছে।এতে প্রকৃত অসহায় মানুষরা বঞ্চিত হয়েছে।অবিলম্বে এ অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত অসহায় মানুষেরা যাতে কার্ড পায় সে দিকে তারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এদিকে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আরব আলী সেখ জানান, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। তিনি নিয়ম মেনেই কার্ড বিতরণের চেষ্টা করেছেন।তবে যদি সচ্ছল ব্যক্তিরা কার্ড পেয়ে থাকে তা খতিয়ে দেখে পরিবর্তন করে গরীরদেরকে দেওয়া হবে।

বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানান, ৯নং ওয়ার্ডে কার্ড বিতরনে অনিয়মের অভিযোগের কথা তিনি শুনেছেন।ইতোমধ্যে কয়েকটি কার্ড কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবর্তনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অবশ্যই অসহায়রা তাদের ন্যায্য কার্ড পাবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top