সকল মেনু

নব্য জেএমবি জঙ্গিদের অস্ত্র-গ্রেনেডের যোগানদাতা দুই মিজান!

f1524ddb358c2e74a0b8c599a99d4a31-581bc203a2d9eহটনিউজ২৪বিডি.কম : গুলশান হামলাসহ নব্য জেএমবির দেশব্যাপী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গ্রেনেডের যোগানদাতা দুই মিজান বলে জানিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)। এই দুই মিজানের একজন বড় মিজান ও অপরজন ছোট মিজান ওরফে তারা নামে পরিচিত। দু’জনের বাড়িই চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায়। তাদের গ্রেফতারে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে। বুধবার রাতে গ্রেফতার হওয়া চার জঙ্গির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে সিটির কর্মকর্তারা। দুই মিজান নব্য জেএমবির মধ্যম সারির নেতা। তাদের সঙ্গে গুলশান হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী ও নূরুল ইসলাম মারজানের যোগাযোগ ছিলো। এই দুই মিজানের নির্দেশেই গ্রেফতারকৃত চার জঙ্গি অস্ত্র-গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলো।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, চার জঙ্গিকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার এবং তা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।

গুলশান হামলায় অস্ত্র-গ্রেনেডের উপকরণ সরবরাহকারী চার জঙ্গির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার দায়িত্বশীল মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান ও সামরিক কমান্ডার মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান ওরফে তারার নির্দেশ ও পরামর্শ মোতাবেক ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসছে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই চার জঙ্গি আবু তাহের, মিজানুর রহমান, সেলিম মিয়া ও তৌফিকুল ইসলাম ওরফে ডা. তৌফিককে গ্রেফতার করা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, তারা জেএমবির সক্রিয় সদস্য। থ্রিমা ও কিকসসহ অন্যান্য অ্যাপসের মাধ্যমে বড় ধরনের নাশকতা করার জন্য ঢাকায় সমবেত হওয়ার চেষ্টা করছিলো। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার শিবগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকার বড় মিজান, রবিউল, জেল্টু ও লাল্টুর মাধ্যমে ডেটোনেটর ও অস্ত্র সংগ্রহ করে। তারা নিজেরা সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি নিয়মিত অস্ত্র ও বিস্ফোরকও সংগ্রহ করতো।

কাউন্টার টেরোরিজম সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, তারা গুলশান হামলার আগে বিভিন্ন সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আমসহ ফলবাহী বিভিন্ন ট্রাকে করে অস্ত্র ও ডেটোনেটর ঢাকায় আনতো। পরে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় হাতে তৈরি গ্রেনেড তৈরি করতো। গুলশান হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেডগুলিও ঢাকার জঙ্গি আস্তানা তৈরি করা হয়েছিলো। তবে ঠিক কোন আস্তানায় তা তৈরি হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

৭৮৭ ডেটোনেটর মানে ৭৮৭ হাতে তৈরি গ্রেনেড!
কাউন্টার টেরোরিজম কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ৭৮৭ টি ডেটোনেটর দিয়ে ৭৮৭টি হাতে তৈরি গ্রেনেড তৈরি সম্ভব। এগুলো দিয়ে তারা কয়েক হাজার লোককে হত্যা করতে পারতো। সিটির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেনেড তৈরিতে অনেক উপকরণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো এই ডেটোনেটর। এসব ডেটোনেটর দেশে তৈরি হয় না। পাশের দেশ ভারত থেকে অবৈধ পথে এসব ডেটোনেটর দেশে আনা হয়। পরবর্তীতে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা তা দিয়ে বোমা বা হাতে তৈরি গ্রেনেড তৈরি করে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সহকারী পুলিশ কমিশনার আহমেদুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব ডেটোনেটর কোথায় এবং কার কাছে পৌঁছানোর কথ ছিলো তা জানার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে তাদের দল নেতা বড় মিজান ও ছোট মিজানকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে দারুসসালাম থানাধীন গাবতলী এলাকা থেকে গ্রেফতার চার জঙ্গি হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানাধীন হাজার বিঘি চাঁদপুর এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে আবু তাহের, একই ধানাধীন ধোবরা কলেজপাড়া এলাকার মৃত ইয়াহু মুন্নার ছেলে মিজানুর রহমান, আবু তাহের, একই থানাধীন আজমতপুরের জালাল উদ্দিনের ছেলে সেলিম মিয়া ও গোয়াবাড়ি চাঁদপুরের সেকেন্দার আলীর ছেলে তৌফিকুল ইসলাম ওরফে ডা. তৌফিক। তাদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দারুসসালাম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলার পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top