সকল মেনু

প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে আইনমন্ত্রীর দ্বিমত

anisul-hoque_42278হটনিউজ২৪বিডি.কম : বিচার বিভাগে দ্বৈত শাসন সম্পর্কিত প্রধান বিচারপতির বিবৃতির সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। একই সঙ্গে তিনি প্রধান বিচারপতির বক্তব্যকে স্ববিরোধী হিসেবেও মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের অবস্থা সম্পর্কিত বিবৃতির একদিন পর আজ মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি সম্মানিত প্রধান বিচারপতিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি। আমি তার বিবৃতি দেখেছি, পড়েছি ও শুনেছি। আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে তার বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। তিনি বলেন, একদিকে আপনি বলছেন আর্টিকেল ৯৬ (সংবিধানের ধারা ৯৬) হচ্ছে একটি ঐতিহাসিক ভুল। আবার বলছেন আপনি আর্টিকেল ১১৬’তে ফিরে যেতে চান। এটি স্ববিরোধী।

আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের বিধানে না থাকলেও সংবিধানের বিদ্যমান আর্টিকেল ১১৬(এ)তে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা রয়েছে। এ আর্টিকেল বহাল থাকতে ১৯৭২ সালের আর্টিকেল ১১৬’র অর্জিনাল ফর্মে আমাদের ফিরে যাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। এখন রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে আইন মন্ত্রণালয় বিচার বিভাগকে পরিচালনা করে কিনা- এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নেতিবাচক উত্তর দেন। আমি সুপ্রিম কোর্টের কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনে সচেষ্টভাবে কাজ করছি। আমি উচ্চ আদালতের সব সুপারিশ অনুসরণ ও তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ৯ম বার্ষিকীতে এ সংবাদ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তব্যের সূচনায় আনিসুল হক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দায়িত্বে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের সব অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্যের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরের ইতিহাস হচ্ছে সামরিক শাসনের ইতিহাস। এক ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে আমরা এই জঞ্জাল পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কিন্তু ২০০১ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় ফিরে আসতে ব্যর্থ হলে এর অধিকাংশ উদ্যোগ স্থবির হয়ে পড়ে।

শেখ হাসিনা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে অন্যতম এক অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করতেন। আনিসুল হক বলেন, শেখ হাসিনার সরকার কখনো বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনি। বরং সব সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রয়োজনে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, হাইকোর্ট ইতালির নাগরিক সিজার তাভেল্লা হত্যাকা-ের আসামীকে জামিন দিয়েছে। অথচ এর আগে নি¤œ আদালত এ জামিন আবেদন নাকচ করে দেয়। আমরা বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করিনি। বরং এই আদেশের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল করেছি। এ ধরনের অসংখ্য উদাহরণ (বিচার বিভাগের প্রতি সরকারের শ্রদ্ধা সম্পর্কিত) দিতে পারি।

আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ২০০৭ সালের স্মরণীয় রায়ের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, সংবিধানের ১১৬(এ) আর্টিকেল অনুযায়ী সরকার বা নির্বাহী বিভাগ কখনো বিচার বিভাগ ও বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। এ সরকার কখনো বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top