সকল মেনু

মনিরামপুরের পানি বন্দি মানুষের বসত ভিটায় ফেরার কাহিনী

unnamedমনিরামপুর থেকে ফিরে, যশোর প্রতিনিধি, আব্দুল ওয়াহাব মুকুল: বাড়ির আঙিনায় কাদা, অদূরেই এখনো পানি। ঘরে চাল-ডাল-নুন নেই, আয়ের পথ নেই। তারপরও বসত ভিটায় ফিরতে শুরু করেছে দুই মাস পানি বন্দি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের বাসিন্দরা। কিন্তু মনে শান্তি নেই।
সাজানো গোছানো ঘর-গৃহস্থালি হারিয়ে তারা দিশেহারা। কারো কারো বাসস্থান ভেঙেচুরে একাকার। সেগুলোর সংস্কারের বা নতুন করে গড়ার সামর্থ তাদেও নেই।
এদিকে, এখনো পৌঁছেনি সরকারি কোন সাহায্য-সহযোগিতা। ফলে মানবেতর জীবনের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে তাদের। অনেকে আবার সেটাও পাচ্ছেন না। এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছে এই ঋষি পল্লীর ৭৩ পরিবারের।
এই গ্রামের দম্পত্তি রবিন দাস ও স্বরস্বতী দাস পানি বন্দিদশার কষ্টভরা নানা গল্প তুলে ধরলেন। কিন্তু সেটা পেরিয়ে গেছে। এখন তাদেরকে প্রতিটি সময় দারুণ পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কথা বলে জানা যায়, ঘরে এক ফোটা চাল ছিল না। এদিকে ঘর ভেঙে শেষ। ফলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে বিশ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মেরামত করেছেন তাদেও ভেঙ্গে পড়া বাড়ি। সরকারি- বেসরকারি কোন সহযোগিতাই তারা পাননি। স্বরস্বতী দাস জানান, ১০ দিন আগে বাড়ি ফিরেছি। এসে দেখি ঘরের চাল নেই। দেয়ালের অবস্থা খারাপ। পরে বিশ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ঘরে টিনের চাল (ছাউনি) দিয়েছি। সাহায্য-সহযোগিতা নাপেলে কিস্তির টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো জানি না। এমনই ভাবে বিধবা পার্বতী দাস, মধাব দাস ও  রনজিত দাসের মতো আরো অনেকেরই মাথার উপর চাল উঠেছে ঠিকই, কিন্তু বেড়েছে ঋণের বোঝা।
এ বিষয়ে নেহালপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজমুস সাদাত বলেন, জলাবদ্ধতায় এক হাজারের বেশি বাড়ি ঘড় ক্ষতির গ্রস্থ হয়েছে। বন্যা পরবর্তী পূর্নবাসন প্রক্রিয়ায় সরকারি ভাবে এখনো সহযোগিতা করা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হচ্ছে। তবে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার সাথে কথা হয়েছে। এর মধ্যে ওয়াল্ড ভিশন ৫৫ টি বাড়ি করে দিবে বলে জানিয়েছে।
উল্লেখ্য যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। পলি পড়ে এই অঞ্চলের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ নাব্যতা হারিয়েছে। এতে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হয় না। গত ৯ ও ১০ আগস্টের টানা বর্ষণে ভবদহ অঞ্চলের বেশির ভাগ অংশ তলিয়ে গিয়েছিল। পরে দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে ভবদহের বাকি অংশ তলিয়ে যায়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে প্রায় তিন লাখ মানুষ। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top