সকল মেনু

মৃত্যু নিশ্চিত হতেই শিশু পূজার শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা

44b616964034c05cae19cac2ddc28861-child-tortureহটনিউজ২৪বিডি.কম : মৃত্যু নিশ্চিত হতেই শিশু পূজার শরীরের সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়েছিল ধর্ষক সাইফুল। এর আগে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয় শিশুটির ওপর। মৃত মনে করেই সাইফুল তাকে বাড়ির পাশের হলদি ক্ষেতে ফেলে যায় বলে পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে। পূজার শরীরে নির্যাতনের ধরন দেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরাও হতবাক। শিশুটির প্রাণহানির শঙ্কা না থাকলেও অঙ্গহানির আশঙ্কা করছেন তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নির্যাতনকারী সাইফুলের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য আছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে।

শিশুটির বাবা সুবল দাস বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সাইফুলকে শিশুটি বড় আব্বা বলে ডাকতো। উভয় পরিবারের সম্পর্কও ভালো ছিল। কিন্তু কী কারণে তার মেয়ের ওপর এমন নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হলো বুঝে উঠতে পারছেন না। সুবলদাস যার বাড়িতে থাকেন, সেই বাড়ির মালিক এনায়েত কবির। তারও বক্তব্য একই। কী কারণে সাইফুল এমন কাজ করলো, তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে এমন নির্মম নির্যাতনের বিচার চান তিনিও।

বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৫ বছরের শিশুটির ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’ তিনি বলেন, ‘শিশুটির জীবন নিয়ে আমরা প্রথমে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু এখনও তার জীবনহানির শঙ্কা নেই। কিন্তু চিরতরে অঙ্গহানির আশঙ্কা রয়েছে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে ঢামেকে আনলে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে অসংখ্য ক্ষত ছিল। তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটি আরও সুস্থ হলে তাকে প্লাস্টিক সার্জারিসহ অন্যান্য সার্জারি করা হবে। সে খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এ জন্য মেডিক্যাল বোর্ডে একজন মানসিক চিকিৎসকও রাখা হয়েছে। তাকে বর্তমানে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।’

এদিকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ৯ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ফেরদৌসী ইসলামকে প্রধান করে এ মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের চিকিৎসক বিলকিস বেগমকে।

গত ১৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর ওই শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খুঁজেও তাকে না পেয়ে রাত ১১টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার বাবা সুবল দাস। পরে ১৯ অক্টোবর ভোর ৬টায় ওই শিশুটিকে বাড়ির পাশের হলুদ ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর শিশুটির বাবা একই গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আফজাল হোসেন কবিরাজকে (৪৮) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সোমবার রাতে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পার্বতীপুর মডেল থানার ইনস্পেক্টর (তদন্ত) বেলাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন সাইফুলই এ নির্মম কাজের সঙ্গে জড়িত। তবে সাইফুল এখন পর্যন্ত জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেনি। এজন্য আদালতে তার সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানি রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top