সকল মেনু

তৃণমূল নেতাদের জয়কে নেতৃত্বে আনার দাবি

52_40353হটনিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে আনার দাবি জানিয়েছেন দলটির তৃণমূল নেতারা। তারা বলেন, ‘জয় দক্ষ, মেধাবী ও যোগ্য। তিনি বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি। তাকে নেতৃত্বে চাই।’ শনিবার আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তৃণমূল নেতারা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেলে তারা এই দাবি তোলেন। এর আগে  সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে নিয়ে আসার বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের বয়স হয়ে গেছে। জয়ের মতো তরুণরাই আগামী দিনে দেশ ও রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবেন।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কাউন্সিল অধিবেশন চলার মধ‌্যে বিকাল সাড়ে ৩টায় উপস্থিত হন জয়। জয়ের উপস্থিতির কথা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ মাইকে ঘোষণা করলে প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকরা সচকিত হয়ে ওঠেন তাকে দেখার জন‌্য। এসময় জয় মঞ্চের সামনে বসে ছিলেন। তাকে মঞ্চে ওঠার অনুরোধ জানানো হয়। তখন তাকে মঞ্চে নিয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ। মঞ্চে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মাঝের আসনে বসেন জয়।

জয় বসার পর সৈয়দ আশরাফ মাইকে বলেন, ‘জয়, তুমি একটু উঠে দাঁড়াও। সবাই তোমাকে দেখতে চায়।’

পরে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের শেষ ভরসা। আর এখানে আছেন আরেকজন শেষ ভরসা। তিনিই নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নেবেন। জয় এসেছে। তার বন্ধুরা আসবে। সহপাঠীরা আসবে। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের বয়স হয়েছে। খুব বেশি কিছু দেওয়ারও নাই, শক্তিও নাই। নতুনদের আসার সুযোগ করে দিতে হবে। তারা যেন এই এই আওয়ামী লীগকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।

কাউন্সিলে এসময় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রতিনিধিরা আলোচনা করছিলেন। জয় আসার পর তার কথাই প্রাধান‌্য পায় আলোচনায়।

তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলে প্রথমেই বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে-বিদেশে ইতোমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি শিক্ষিত, মেধাবী ও যোগ্য। তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে আনার দাবি জানাই।’ এই সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার সন্তান জয় আজ ষোলো কোটি মানুষের গর্ব। আপনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে পারবেন জয়। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আপনি যে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন, সে যুদ্ধ শেষ করেই কেবল আপনি বিদায় নিতে পারবেন। এছাড়া আপনাকে আমরা বিদায় দিতে পারব না।।’

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করা হয়। এর উদ্ভাবক আর কেউ নন, তিনি জয়। জয় ইতোমধ্যেই তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যতে নেতৃত্বে তাকে দেখতে চাই।’

রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন বলেন, ‘জয় আমাদের মধ্যমণি। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী। বঙ্গবন্ধুর রক্ত, শেখ হাসিনার সন্তান জয়কে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে নিয়ে এসে উপযুক্ত স্থানে দেওয়া হোক।’

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনে আপনার (শেখ হাসিনা) প্রতি আস্থা আছে। আপনার রানিংমেট কাকে ঠিক করবেন, সেটা আপনিই ভালো বুঝবেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইতোপূর্বে আপনাকে নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন, আপনি সে আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পেরেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে দেখতে চাই। তিনি দায়িত্ব পালন করলে আওয়ামী লীগ আরও এগিয়ে যাবে।’

ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরসূরি দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে যিনি নেতৃত্বে আসবেন, তার নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে।’

খুলনা জেলার সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি গ্রুপ আছে বলেই আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ থাকলে, বিশ বছরেও কেউ আওয়ামী লীগকে সরাতে পারবে না ।’ আগামী দিনের কমিটিতে জয়কে সম্মানজনক জায়গা রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জয় আগামী দিনের পাইওনিয়র। আওয়ামী লীগের শত্রু বাইরের কেউ নয়। আমরাই আমাদের শত্রু। কারও পেছনে ছুরিকাঘাত করব না। নিজেরাই নিজেদের সমস্যার সমাধান করব, এই ব্রত নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

এর আগে আগে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চাই।’ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তরুণ নেতৃত্বের অহঙ্কার জয়। তিনি আগামী দিনেরে নেতৃত্ব আসবেন, সে বিশ্বাস ও সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’

প্রথম দিনের বক্তব্য শেষে সভাপতি শেখ হাসিনা বিকাল ৫টার দিকে কাউন্সিল অধিবেশন আগামীকাল সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আগামীকাল জেলা নেতারা তিন মিনিট করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। আশা করি, আপনারা এই সময়ের মধ্যে বক্তব্য রাখবেন এবং জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করবেন। এরপর আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধ ও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যাব। নতুন নির্বাচনের জন্য যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন।’

উল্লেখ্য, আগামীকাল রবিবারের অধিবেশন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top