সকল মেনু

বর্ষীয়ান রাজনীতিক অজয় রায় আর নেই

ajoy-raiহটনিউজ২৪বিডি.কম : সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি এবং সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় রায় (৮৮) আর নেই। রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে সোমবার ভোর ৫টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি ও গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক বাপ্পাদিত্য বসু এ তথ্য নিশ্চিক করেছেন।

১৯ অক্টোবর সকাল ১০টায় অজয় রায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।

দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা সংলগ্ন টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদও আহত হন।

অধ্যাপক অজয় রায়ের জন্ম দিনাজপুরে, ১৯৩৫ সালে। স্থানীয় মহারাজা গিরিজানাথ হাই ইংলিশ স্কুলে লেখাপড়ার হাতেখড়ি। উচ্চ-মাধ্যমিকে এসে ভর্তি হন দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। এরপর ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করে কিছু দিন কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে ১৯৫৯-৬০ সালের শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয় তার দীর্ঘ পথ চলা। চল্লিশটি বছর অধ্যাপনা শেষে ২০০০ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির প্রায় সবগুলো দৈনিক, মাসিক একাডেমিক জার্নালে তার লেখা প্রকাশিত হয়। অধ্যাপক অজয় রায় ২০০৮ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। পরের বছর পান এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলোশিপ। ২০১১ সালে বাংলা একাডেমি পদক পান তিনি। পরের বছর ২০১২ এ গুণী ব্যক্তি শিক্ষায় অনন্যসাধারণ ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘একুশে পদক’ এ ভূষিত হন।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং ধর্মনিরপেতা, মুক্তচিন্তার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার জন্য ২০০৭ সালে অধ্যাপক অজয় রায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম পদকে ভূষিত হন।

তিনি বিভিন্ন সময় এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনীর ওপর একাধিক গেরিলা আক্রমণ করেন। এরপর তাজউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত প্রবাসী স্বাধীন বাংলা সরকারের প্ল্যানিং সেলে সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। একাত্তরের মে মাস থেকে ডিসে্ম্বর পর্যন্ত ভারতে তিনি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। অধ্যাপক অজয় রায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়নরোধে সোচ্চার ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top