সকল মেনু

নড়াইলে দুদকের গণ শুনানী নিয়ে আতংকিত দুর্নীতিগ্রস্থরা

indexউজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলে দুদকের গণ শুনানী নিয়ে আতংকগ্রস্থ রয়েছেন দুর্ণীতিগ্রস্থরা। ১৬ অক্টোবরের গণ শুনানীতে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার ভয়ে চলছে দৌড় ঝাপ। জেলা প্রশাসক মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ এর সভাপতিত্বে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দুদকের কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। সঞ্চালকের দ্বায়িত্বে থাকবেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমান। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের পাঠানো তথ্যর ভিতিতে জানা যায় এদিকে এ গণ শুনানী নিয়ে ভীত সন্ত্রস্থ জেলার দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদেরকে বাঁচানোর পথ খুজছেন। গণ শুনানীর সভাপতির দ্বায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক পর্যন্ত আতংকিত রয়েছেন বলে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে। কখন কার হাতে হতকড়া উঠে যায় তা নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার শেষ নেই। এ নিয়ে জনসাধারনের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক কৌতুহল। সচেতন মহলে রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। ক্ষতিগ্রস্থ অনেকে আশায় বুক বেধেছেন এবার বোধ হয় দুর্ণীতিবাজদের কিছু একটা হবে। এদিকে তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, দুর্ণীতিবাজদের বিরূদ্ধে যাতে মুখ না খোলা হয় সেজন্য ইতোমধ্যে অনেক দেন দরবার ও তদবীর করা হয়েছে। অনেককে শাসানো হয়েছে।

কাউকে আবার হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে কোন রকম মুখ খুললে পরবর্তীতে দেখে নেয়া হবে। অভিযোগ করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া লোকজনদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে অভিযোগ করা হতে বিরত রাখার চেষ্টা চলছে। অনেকে আবার দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছেন অভিযোগ করে কোন ফল হলো না। আবার উল্টে কোন বিপদে না পড়তে হয়। ইতোমধ্যে অভিযোগ ঠেকাতে যারা ব্যাপক দৌড়ঝাপ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, সদর সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত সিংহ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হরিপদ মন্ডল, লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক, নড়াইল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক বিল্লাল হোসেন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এসএম জাফরী, জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (এজি অফিস), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলী, নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শরীফুল ইসলাম, লোহগড়ার কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান প্রমুখ। সম্প্রতি নড়াইল জেলায় ভয়াবহ দুর্ণীতি অনিয়ম ও লুটপাটের বেশ কয়েকটি ঘটনা জেলাবাসিকে হতবাক ও বিস্মিত করেছে। খোদ জেলা প্রশাসনেই রয়েছে দুর্ণীতির বড় ভুত। টাকা ছাড়া সেখানে কোন কাজ হয়না। তবে ঘুষের টকার লেনদেন হয় ভুতুড়ে কায়দায়। কারো নিকট টাকা চাওয়া হয়না। কোন কাজে গেলে নানা ধরনের তালবাহানা করা হয়। এক পর্যায়ে সুকৌশলে বুঝিয়ে দেয়া হয় এলআর ফান্ড বা ফকির উন্নয়ন তহবিলে কিছু দিলে কাজটা সহজ হবে।

বন্দুকের লাইসেন্স সংক্রান্ত কাজ, ইটভাটা, কয়লার ভাটা সহ বিভিন্ন খাত হতে টাকা নেয়া হয়। সকল প্রকার লেনদেন হয় ভৌতিক কয়দায়। আর সেকারণে ভুতুড়ে ঘুষের প্রমাণ দেয়া বড় কঠিন। সদর সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত সিংহ যোগদানের পরই খোলামেলা ঘুষের নিয়ম চালু করেছেন। তিনি দলিল প্রতি ১ হাজার টাকা, নামপত্তন না থাকলে ১ হাজার টাকা, পর্চা না থাকলে ১ হাজার টাকা করে নিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করেন। তিনি গোপনে ঘুষ নেয়া পছন্দ করেন না। দলিল লেখকদের  মাধ্যমে খাত ওয়ারী ঘুষের টাকা পেলে অত্যন্ত খুশি মনে কাজটি করে দেন। হিসাব রক্ষণ অফিসের ঘুষ নেয়া হয় চুপিচুপি। এখানকার ঘুষ দাতারা এ অফিসের নিয়মিত কাস্টমার তাই তারা জানেন কোন কাজে কত দিতে হবে। প্রত্যেকটা কাজের একটা রেট আছে। সে হিসেবে ঘুষ নেয়া হয়। সদর ও লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ নিয়ে  কয়েক হাজার মেঃ টঃ চাল বিক্রি করে একটি সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকা আতœসাত করেছে। ভূয়া প্রকল্পের নাম দিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় জিআর প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। ধর্মেও নামে এসব ভয়াবহ লুটপাটের বিচার চেয়ে একাধিক মিছিল মিটিং হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top