সকল মেনু

স্কুল শিক্ষক পান্নাকে ত্যাগ করলেন স্ত্রী চুমকী

download (29)কাঞ্চন কুমার,কুষ্টিয়া থেকে:কুষ্টিয়ায় স্কুল ছাত্রীদের ফাঁদে ফেলে তাদের ওপর যৌন নির্যাতন চালানো ও গোপনে ভিডিও ধারন করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া সেই আলোচিত স্কুল শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্নাকে শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার চুমকীও ত্যাগ করেছেন।নিজ স্কুলের একাধিক ছাত্রীদের সাথে যৌন কেলেংকারীর ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার এক মাস পর স্থানীয় কাজীকে বাসায় ডেকে নিয়ে এসে চুমকী স্বেচ্ছায় পারিবারিকভাবে শরিয়ত মোতাবেক স্বামী হেলাল উদ্দিন পান্নাকে তালাক প্রদান করেন। একই সাথে তিনি তার জঘন্য স্বামীর ঘৃণিত এ অপরাধের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তিও দাবি করেছেন।জানা যায়, হরিপুরের তছলিম মিস্ত্রির ছেলে পান্নার সাথে একই এলাকার ব্যবসায়ী শহিদুলের মেয়ে ফাতেমা আক্তার চুমকীর প্রায় ১১ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ৯ বছর বয়সী তাফিন নামের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়া শহরতলীর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক লম্পট হেলাল উদ্দিন পান্নার যৌন লালসার শিকার হন তারই প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ছাত্রী। প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে আবার কখনও প্রেমের ফাঁদে ফেলে অসংখ্য মেয়ের সর্বনাশ করেন শিক্ষক নামধারী ওই লম্পট। ছাত্রীদের সাথে শুধু দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনই নয়, ভবিষ্যত্বে যে কোন সময় যাতে ব্লাক মেইলিং করা যায় এ জন্য গোপনে প্রতিটি অন্তরঙ্গ মূহুর্তের দৃশ্যের নিখুঁত ভিডিও চিত্রধারণ করে রাখেন পান্না।এভাবে দিনের পর দিন বছরের পর বছর ওই শিক্ষকের লালসার শিকার হন তারই প্রতিষ্ঠানের অনেক ছাত্রী। যাদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের গণিতের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না ২০০৩ সালের মে মাসে বারখাদা কানাবিল এলাকার আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষক হিসেবে খুবই ভাল হওয়ার সুবাধে অল্প দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের মাঝে তার ব্যাপক সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। দিনের পর দিন তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। এ সময় তিনি আড়ুয়াপাড়ার বাঘা যতীন রোডে কোচিং’র জন্য বাসা ভাড়া নেন। অল্প দিনের মধ্যে তার ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের কাছে।ই সুযোগে ওই কোচিং সেন্টারে ছাত্রীদের ৪-৫ টা ব্যাচ পড়ানো শুরু করেন শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না। ভাল শিক্ষক হওয়ার সুবাদে ছাত্রীদের সাথে আস্তে আস্তে সুমধুর সম্পর্ক গড়ে তোলে সুচতুর পান্না। জাল বিস্তার করে শিকার ধরার ফাঁদ তৈরী করে। সুসম্পর্কের এক পর্যায়ে ছাত্রীদের অল্প বয়সের সরলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক ছাত্রীদের সর্বনাশ করতে থাকে শিক্ষক নামধারী লম্পট হেলাল উদ্দিন পান্না। কারোর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবার কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধেও দৈহিক মিলনে বাধ্য করে লম্পট পান্না। গত ১৫ জুন এক ছাত্রীর সাথে মোবাইলে ছবি তোলার সূত্র ধরে স্থানীয় যুবকরা হেলাল উদ্দিন পান্নাকে গণপিটুনী দিয়ে তার মোবাইল ও ল্যাপটপ কেড়ে রেখে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে বের হয়ে আসে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা অসংখ্য ছাত্রীর সাথে পান্নার যৌন কেলেংকারীর একাধিক ভিডিও ক্লিপ।ঘটনা জানা জানি হয়ে গেলে সুচতুর পান্না নিজেকে বাঁচাতে এবং ঘটনার মোড় অন্যদিকে ঘুরাতে ট্রাম কার্ড হিসেবে প্রকৌশলী আলিমুজ্জামন টুটুল, সজলসহ কয়েক জনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের গোপনে করে রাখা ভিডিও ইন্টারনেট এবং মোবাইলে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় গত ৭ জুলাই কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না, তিন প্রকৌশলী টুটুল, সজল ও হাসানকে আসামী করে পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান হাসানকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। তবে এ ঘটনার মূল হোতা লম্পট হেলাল উদ্দিন পান্না এখনও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে। একই ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল, সজল ও হাসানকে চাকুরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top