সকল মেনু

ডিএনসিসি’র সামান্য কর্মচারী হয়েও তারা এখন কোটিপতি!

durnitiহটনিউজ২৪বিডি.কম : ডিএনসিসি’র সামান্য কর্মচারী হয়েও গুটি কয়েক লোক আজ কোটিপতি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কিছু কর্মচারী অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করে চলেছেন। অঞ্চল-৩ গুলশানে লেজার কিপার বজলুল মোহাইমিন বকুল ক্ষমতার দাপট এবং প্রভাব খাটিয়ে শ্রমিক লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতি মাসে তিনি এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার টেবিলে চারজন বহিরাগত লোক দ্বারা এসিসট্যান্ট এর কাজ করানো হয়, যাদের প্রতিদিন ২ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় তার ছয় তলা দুইটি বিল্ডিং রয়েছে। তিনি একটি মারুতি গাড়ির মালিক। গুলশান এলাকায় তার নামে বেনামে ফ্ল্যাট ও বাসা রয়েছে। তিনি নগদ ৮-১০ কোটি টাকার মালিক। যা তার আয়ের সাথে সম্পূর্ণ অমিল। তিনি কয়েকদিন আগে অঞ্চল-৩ গুলশানের রুহুল আমিন হাওলাদার নামক এক কর্মচারী যার মূল পদ ঔষধ বহনকারী দারোয়ান, তাকে দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের হেলথ্ ইন্সপেক্টরদের পিয়ন এর কাজ করান। সেই কর্মচারীর কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহকারী পদে দায়িত্ব দেয়ার কথা বলে দুই লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। এই ফাইলটি বর্তমানে সচিবের দপ্তরে রয়েছে। তিনি মোঃ মাঈনুদ্দিন এর কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের জন্ম-মৃত্যু রেজিস্ট্রার সহকারী হিসেবে অঞ্চল-১ উত্তরা থেকে অঞ্চল-৩ গুলশানে বদলি করে আনেন।

বকুল পূর্বে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। পরে জাতীয় পার্টির সাথে জড়িত হন। সর্বশেষ সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত হবার পর তিনি উত্তর সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিক লীগের সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি মদ্যপান, নারীঘটিত কর্মকান্ড সহ নানারকম অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। তিনি কর্মচারীদের স্বার্থ বিবেচনা না করে তাদের বিরুদ্ধাচারণ করেন এবং প্রশাসনের পক্ষাবলম্বন করেন। এছাড়াও স্প্রেম্যান জামাল এবং এবং মাসুদ কাজী চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও তারা আজ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। স্প্রেম্যান জামাল মদ, গাজা, নারীবাজি এবং জুয়া খেলার অপরাধে গুলশান অঞ্চল-৩ হতে অঞ্চল-২ মিরপুরে স্প্রেম্যান পদে প্রশাসন বদলি করেন। কিন্তু তিনি অঞ্চল-২ এ ডিউটি করেন না, মশকের মেশিন কাঁধে নেন না। তিনি সারাদিন অঞ্চল-৩ গুলশান অফিসে এসে তদবির বানিজ্য করেন। যেমন ট্রেড লাইসেন্স, জাল সিল মারা, বার্থ সার্টিফিকেট, হোল্ডিং ট্যাক্স, রোড কার্টিং এর দালালি সহ নানা রকম অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। বদলি হওয়ার পরেও গুলশান এলাকার বিভিন্ন হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, বার, আবাসিক হোটেল, স্পা, বেকারী, কারখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান হতে প্রতিমাসে মোটা অংকের চাঁদা তুলে থাকেন। চাঁদা না দিলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মামলার ভয় দেখান। এভাবে সে বর্তমানে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে গুলশান ছোলমাইদ এলাকায় আড়াই কাঠা করে ৩টি প্লট এর মালিক হয়েছেন। তিনি নগদ কয়েক কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে তিনি যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই বাসার ভাড়া মাসিক ২৯ হাজার টাকা। অথচ তার বর্তমান বেতন এর চেয়ে অনেক কম। আয়ের সাথে কোন মিল নেই। তিনি প্রায় সময় মাতাল অবস্থায় থাকেন এবং ডিএনসিসি’র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করে থাকেন। বিএনপি সরকারের আমলে তাদের দালালি করতেন, এখন খোলস পাল্টিয়ে শ্রমিকলীগ হয়ে গেছেন। একই রকমভাবে স্প্রেম্যান মাসুদ কাজী ট্রেড লাইসেন্সের সিল জালিয়াতিসহ অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সে গ্রামের বাড়িতে কয়েক বিঘা জমির মালিক। স্প্রেম্যান জামাল ও মাসুদ কাজীর নিজস্ব মোটর বাইক রয়েছে। বাইকের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০-৫০০ টাকার তেল কিনতে হয়। তাদের এই টাকার উৎস কোথায়? তারা সামান্য চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। ডিএনসিসির কর্তৃপক্ষের উচিত সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে উপরোক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top