সকল মেনু

হাড়িনালে পৃথক ২টি জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত ৯

gazipur-pic-3_37935হটনিউজ২৪বিডি.কম : গাজীপুরের পাতারটেক ও হাড়িনালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গি নিহত হয়েছেন। নিহত সবাই জঙ্গি বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে। নিহত ৩জন বাদে বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

আজ শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পৃথক দুই স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ, র‌্যাব, সোয়াত। অভিযানে গাজীপুরের পাতারটেকে এলাকায় ৭ জন ও হাড়িনালে ২ জন নিহত হন।

গাজীপুরের পাতারটেকে নিহত একজনের পরিচয় জানতে পেরেছে র‌্যাব। তিনি হলেন, নব্য জেএমবির ঢাকা অঞ্চলের সমন্বয়ক আকাশ। র‌্যাব হেড কোয়ার্টারের সিনিয়র এএসপি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অন্যদিকে ভোরে হারিনাল পশ্চিমপাড়া লেবুবাজার এলাকার আতাউর রহমানের একতলা বাড়িতে পুলিশের সহায়তায় অভিযান শুরু হয় বলে র‌্যাব-১ এর উপ-অধিনায়ক কাজী মো. সোয়াইব জানান। এ বাড়িতে অভিযানে নিহত হন ২ জন
সেখানে ২ জন নিহত হওয়ার খবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিশ্চিত করেন র‌্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি বলেন, নিহতদের একজন রাশেদুল (২০) এবং অন্যজন তৌহিদুল ইসলাম (২২) বলে বাড়ির মালিক আতাউর জানিয়েছেন। তৌহিদ ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েটে) শিক্ষার্থী, রাশেদ এবার এইচএসসি পাস করেছে।

ওই বাড়ি থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, একটি পিস্তল, রাইফেলের ৭০ রাউন্ড গুলি, কিছু বিস্ফোরক ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

গাজীপুর ডিবি পুলিশের ওসি মো. আমীর হোসেন জানান, গোপণ তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার রাত ৩টা থেকে হাড়িনাল এলাকার লেবু বাগানের ওই বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। আজ শনিবার সকালের দিকে সেখানে অভিযান শুরু হয়। জঙ্গিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে বাড়ি থেকে ২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া পাতারটেকের একটি দোতলা বাড়িতে আজ শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে বাড়িটিতে পুলিশের অভিযান চলে, তার মালিক সৌদি প্রবাসী সোলেমান সরকারর। বর্তমানে তার ভাই কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আরবি শিক্ষক ওসমান গণি বাড়িটি দেখাশোনা করেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

তিন মাস আগে তার কাছ থেকে ৩ জন ব্যক্তি বাড়িটির দোতলা ভাড়া নেয়। ওই ৩ জন জঙ্গি বলে ধারণা পুলিশের।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান পর্যবেক্ষণ করেন।

র‌্যাব ও পুলিশের দুই অভিযানের খবরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও গাজীপুরে যান। এসময় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান ও জাবেদ পাটোয়ারীও উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, এখানে যারা ছিল, সবাই জঙ্গি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। কিছু একটা ঘটনোর জন্য তারা এখানে আত্মগোপণ করে ছিল। এদের পরিচয় আমরা পরে জানাব।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের কোনো সন্ধান পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেজর জিয়া বা লেফটেন্যান্ট জিয়া আমাদের কাছে ফ্যাক্টর না। তবে জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত কেউ পার পাবে না। আমরা এদের নির্মূল করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।

পরে বিকেল ৩টার দিকে সোয়াতের একটি টিম সেখানে আবারো অভিযান চালায়। তাদের অভিযানে ৭ জঙ্গি নিহত হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ওই বাসাতে সাতজনই ছিলেন বলে মন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, যৌথ অভিযানে পুলিশ চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিল। তাদের আত্মসমর্পণ করার জন্য বলেছিল। কিন্তু তারা আত্মসমর্পণ করেনি। ফলে আমাদের পুলিশ, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, সোয়াত, র‌্যাব যৌথভাবে আক্রমণ পরিচালনা করে।

তিনি বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণ হতে দেখেছে। আমাদের বাহিনী জীবনবাজি রেখে দেশের মায়ায় জঙ্গি দমনে কাজ করছে। সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের টিম পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।

র‌্যাব-১ এর উপ-পরিচালক মহিউল ইসলাম বলেন, গোপণ সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে এই জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করা হয়। গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বেশ কয়েকজন জঙ্গি নিহত হন। এরপর গাজীপুরে এক দিনে দুটি আস্তানায় অভিযান হল, যাতে নিহত হলেন ৯ জন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top