সকল মেনু

নড়াইলের পল্লীতে,কাজের মেয়ে খুন : জামাই রাসেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

indexউজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলের নাজমিন নাহার (২০)নামে ভাড়াটিয়া কাম, কাজের মেয়ে খুন নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। নাজমিনের খুনুকে আত্মহত্যা বললে নাজমিনের পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের পাঠানো তথ্যর ভিতিতে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাউড়িখোলা গ্রামের মৃত হেমায়েত শেখের স্ত্রী ফরিদা বেগম ও তার মেয়ে নাজমিন গত দুই মাস পূর্বে জয়পুর স্ট্যান্ড মোড়ের পেছনে মৃত মহিউদ্দিনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন। আর্থিক অস্বচ্ছলতা থাকায় নাজমিনের মা অন্যের বাসায় এবং নাজমিন বাড়ির মালিক মৃত মহিউদ্দিন এর স্ত্রী লাকী বেগমের ঘরে কাজ করতেন। গত ২ অক্টোবর সকালে লাকী বেগমের ঘরে কাজ করতে দিয়ে ফরিদা বেগম চলে যান অন্যের বাড়ি কাজ করতে।

বিকাল ৪টার দিকে ফরিদা বেগম খবর পান তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। লাকী বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের দাবি নাজমিন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। অপর দিকে ফরিদা বেগম অভিযোগ করছেন লাকী বেগমের অনৈতিক কাজে স্বাক্ষী বা বাধা হয়ে যাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ফরিদা বেগম অভিযোগে জানান, লাকী বেগম দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে অনৈতিক কাজ করে আসছিল। অনেক অপকর্মের স্বাক্ষী হয়ে গিয়েছিল নাজমিন। নাজমিন কে লাকী বোম্বে নিয়ে যাবার প্রস্তাবও দিয়েছিল কিন্তু আমরা রাজি হইনি। নাজমিনের নানি জয়তুন নেছা(৬৫) অভিযোগ করেন, গত কোরবাণীর ঈদের আগে নাজমিনকে আনার জন্য আমি ও আমার তিনজন আত্মীয় লাকীর বাড়িতে গেলে লাকী গালিগালাজ করে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। এমনকি নাজমিনের স্বামী হান্নান এর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়েছে লাকী বেগম। মৃত নাজমিনের মা ও নানী বলেন, লাকী বেগমের অনেক অপকর্মের স্বাক্ষী হয়ে যাওয়ায় লাকী ও তার মেয়ে মিতু নাজমিনকে হত্যা করে ওড়না পেঁচিয়ে ঘরে ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা প্রচার করেছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার কয়েকজন জানায়, লাকী বেগম এলাকায় ব্যাপক প্রভাবশালী নারী হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন মানুষকে কারনে-অকারনে মামলায় ঝুঁলিয়ে হয়রানি করা তার স্বভাব। মামলা থেকে রক্ষা পায়নি তার আপন জামাই রাসেলও। মেয়ে মিতুতে মারপিটের অভিযোগ এনে জামাই রাসেলের বিরুদ্ধে থানায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন লাকী বেগম। লাকী বেগম জানান, আমার মেয়েকে মারপিট করায় জামাই রাসেলের নামে মামলা দায়ের করেছি। মামলা দায়েরের পর থেকে রাসেল এলাকায় না থাকায় পুলিশ তাকে ধরতে পারছেনা। কোথায় আছে জানতে পারলে রাসেল কে পুলিশে ধরিয়ে দেবো।

মামলা দায়েরের পর থেকে জামাইয়ের সাথে শ্বশুর বাড়ির যোগাযোগ নেই বলে লাকী জানান। সদ্য সমাপ্ত লোহাগড়া পৌর নির্বাচনে লাকী বেগম জয়পুর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সকল অভিযোগ অস্বীকার করে লাকী বেগম ফোনে বলেন, নাজমিন ফোনে অন্যপুরুষের সাথে কথা বলতো। হয়তো কারো সাথে ঝগড়া-ঝাটি করেছে, তাই মনের কষ্টে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার(৮ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে লাকী বেগমের বাড়িতে গেলে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। লোহাগড়া থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, ৩ অক্টোবর নড়াইল সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদ রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারন বোঝা যাবে। প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top