সকল মেনু

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কমছে পানি, বাড়ছে ভাঙন

Bhuiyanpur Bonna pic3=-21-07-2013মিয়া মোঃ নোমান, টাঙ্গাইল:‘নদীর একুল ভাঙগে ওকুল গড়ে এই নদীর খেলা’ নদীর এই ভাঙা গড়ার কবলে পড়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের ৪টি ইউনিয়নে দুই বছরে শতশত পরিবার বাস্তুহীন হয়ে পড়েছে। নদীর সাথে যুদ্ধ করে বসবাস করছে ভাঙন কবলিত মানুষ। ঘর-বাড়ি হারিয়ে যাযাবর জীবন-যাপন করছে ওইসব ঘর হারা মানুষ। ইতিমধ্যে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে খানুরবাড়ী নামের একটি গ্রাম। দুই বছর আগে স্থানীয় এমপি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি খন্দকার আসাদুজ্জামান ভাঙন পরির্দশনে এসে নদী ভাঙন রোধে প্রতিশ্র“তি দিলেও অদ্যবধি তার কোন বাস্তবায়ন বা তার উপস্থিতি নেই।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, যমুনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারী কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় হতাশ হয়ে পড়েছে আরো নতুন করে ভাঙনের কবলে থাকা কয়েক হাজার পরিবার। অসহায় এ মানুষগুলো ভাঙন রোধে সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় নদীতে বাঁশ ও ছোন দিয়ে বাধঁ দিয়েছে ঘর-বাড়ি রক্ষার্থে। তাতেও কোন ফল হচ্ছে না। নদীর গতিবেগ প্রবল হওয়ায় কোন কিছুতেই ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। অব্যাহতভাবে ভাঙনের ফলে নতুন করে ১টি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি, ২টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ২টি হাইস্কুল, ৫টি প্রাইমারি, ২টি মাদ্রাসা, ৫টি কিন্ডারগার্টেন ১০টি পোল্ট্রির খামার, ৫টি মসজিদ, ৪টি মন্দির ও ২টি বাজারসহ ৯-১০ গ্রামের হাজার হাজার পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে। অথচ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অদ্যাবধি কোন উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।

জানা যায়, ভয়াবহ ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কোনাবাড়ী-খানুরবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। গত বছরেই ২কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নদী গর্ভে চলে গেছে।

অথচ অদৃশ্য কারনেই স্থানীয় প্রশাসন ও টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড নিরব ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ২০১১ সালে উপজেলার খানুরবাড়ী ভাঙন পরিদর্শনে এসে পিংনা থেকে যোগারচর পর্যন্ত গাইডবাঁধ নির্মাণে প্রতিশ্র“তি দিলেও অদ্যবধি তার কোন নমুনাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে সেখানকার মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়াও এখনো পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন থেকে কোন সাহায্য ও সহযোগিতা পায়নি ভাঙন কবলিত পরিবার। ভাঙন প্রতিরোধে নেয়া হয়নি জোড়ালো কোন পদক্ষেপ। গোবিন্দাসী ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য আসাদুজ্জামান শিকদার বলেন, ‘জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়েও জনগনের পাশে গিয়ে দাড়াতে পারছি না। গত দুই বছরে ভাঙনে মানচিত্র থেকে খানুরবাড়ী নামে একটি গ্রাম নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও নতুন করে ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া, চরচিতুলিয়া, কোনাবাড়ী গ্রামের শতশত পরিবার ভাঙনে বাস্তুহীন হয়ে পড়ার আশংঙ্কায় রয়েছে। সরকারের কাছে দাবী খুব দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হেলালুজ্জামান সরকার জানান, ‘ভাঙন রোধে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সহায়তা পাবো।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানান, ভূঞাপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের জন্য নতুন করে ২৫ কোটি টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনায়লয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাষ্ট ফান্ডে জমা দেয়া হয়েছে। সচিবের নেতৃত্বে টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top