সকল মেনু

আজ আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস

info_35927হটনিউজ ডেস্ক : আজ বুধবার আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস- ২০১৬। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বাংলদেশে দিবসটি পালন করা হবে। দিবসটিকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘তথ্য পেলে মুক্তি মেলে- সোনার বাংলার স্বপ্ন ফলে’। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, তথ্যই শক্তি, সঠিক তথ্য অমূল্য সম্পদ। সহজে ও সুলভে সঠিক তথ্য প্রাপ্তি প্রত্যেক মানুষের নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। তথ্য মানুষকে সর্বদাই সচেতন করে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। তিনি বলেন, তথ্য অধিকার আইনের সফল প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাচ্ছেন এবং দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। আমি আশা করি এর মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকা-ে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উন্নয়ন কার্যক্রম আরো স্বচ্ছ ও গতিশীল হচ্ছে।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘তথ্য অধিকার দিবস- ২০১৬’ পালনের মাধ্যমে তথ্য প্রাপ্তি সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা আরো বৃদ্ধি পাবে, দেশে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত হবে এবং জনগণের ক্ষমতায়ন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, তথ্য জানার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সরকার জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর। তথ্যের অবাধ প্রবাহ যেমন নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক, তেমনি তা সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়নকে প্রতিষ্ঠা করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের তথ্য জানার অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়েই সরকার ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ প্রণয়ন করেছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য কমিশন গঠন করেছে। ফলে জনগণ সহজেই প্রায় সব তথ্য সম্পর্কেই জানতে পারছেন এবং তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের তথ্য অধিকার ও তথ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকার প্রশংসনীয় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি নতুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও ও কমিউনিটি রেডিও এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা
কামনা করেন তিনি।
এদিকে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, তথ্য অধিকার আইনের অধিকতর ব্যবহার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মাধ্যমেই জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র ও সুশাসন আরও সুদৃঢ় হবে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ২৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার জনগণের তথ্য জানার অধিকারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
জনগণের ক্ষমতায়নে তথ্য একটি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের এ অধিকারকে সম্মান দিয়ে নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী আমরা নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ পাস করি। এই আইনের আওতায় তথ্য কমিশন গঠন করা হয়। ফলে জনগণ ও গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনগণের ক্ষমতায়ন ত্বরান্বিত হয়েছে।
দেশে গণমাধ্যমের বিকাশ ও অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরাই প্রথম দেশে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দেই। তথ্যের অবাধ প্রবাহকে আরো বিস্তৃত করতে আমরা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি ওয়ার্ল্ড এবং সংসদ টেলিভিশনের পাশাপাশি ৪১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছি। এ ছাড়া বেসরকারি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২৮টি এফএম বেতার কেন্দ্র এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও। ফলে, তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা সহজতর হয়েছে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। সংসদ টেলিভিশন চালুর ফলে গণমানুষের কাছে সংসদের কার্যক্রম সরাসরি পৌঁছানো অত্যন্ত সহজ হয়েছে। দেশের গণমাধ্যম এখন পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিকারের ব্যাপক প্রসার ও প্রয়োগে ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিসীম। আমরা দেশের সকল ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ, দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের প্রায় ২৫ হাজার ওয়েবসাইট নিয়ে ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ চালু করেছি। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে নিজস্ব ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ হ্রাসের ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় কোটিতে উন্নীত হয়েছে। এরফলে তথ্যপ্রাপ্তির সকল সুযোগ-সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। আমাদের প্রত্যাশিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন অনেক দূর এগিয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top