সকল মেনু

হতবাক করলো ‘ফাঁকা’ শোলাকিয়া

একে তো অঝর ধারায় বৃষ্টি, তার ওপর দুই মাস আগে ঈদুল ফিতরে মাঠের অদূরে জঙ্গি হামলার তিক্ত অভিজ্ঞতা। এসব কারণে আজ ঈদুল আজহার দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ময়দানকে অচেনা লেগেছে। দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দানে আজ নামাজ পড়েছেন অল্প কিছু মুসল্লি। তাদের চেয়ে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যাই ছিল কয়েক গুণ বেশি।
শত বছর ধরে এই ময়দানে হয়ে আসা ঈদের জামাতে এত কম উপস্থিতি কখনো দেখেনি কিশোরগঞ্জবাসী। একই সঙ্গে দেখেনি এমন নিরাপত্তা কড়াকড়িও। ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আজহায় লোক সমাগম যদিও কিছু কম হয়ে থাকে, তাই বলে মাঠ কখনো এতটা ফাঁকা থাকে না।
দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহে নামাজ পড়তে দেশের বিভিন্ন এলাকা তো বটেই দেশের বাইরে থেকেও আসে মুসল্লিরা। সেই পৌনে দুই শ বছর আগে প্রথম জামাতেই সোয়া লাখ লোক হয়েছিল বলেই মাঠের নাম শোলাকিয়া হয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে।  সেখানে মঙ্গলবার মাঠের এমন চিত্র অবাক করেছে স্থানীয় লোকজনকে।
অল্প যে কজন মুসল্লি এসেছেন, তারা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই মাঠে গিয়েছেন। এবারের ১৮৯তম ঈদুল আজহার জামাতে ইমামতি করেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। জামাত শুরু হয় সকাল ৯টায়।
তবে গত ঈদে মাঠের কাছে জঙ্গি হামলার প্রভাবেই মাঠ শূন্য ছিল কি না তা অবশ্য বোঝার উপায় নেই। কারণ কিশোরগঞ্জে গত রাত থেকেই প্রবল বর্ষণ হচ্ছিল। মাঠে ছাউনি না থাকায় এই বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে নামাজ পড়া কঠিন। বৃষ্টির কারণে আশপাশের মসজিদেও মুসল্লিদের ভিড় হয় অন্যান্য বছরের চেয়ে কম।
শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় করবেন ভেবে যারা অন্য জেলা থেকে সেখানে নিয়েছিলেন, তারা অবশ্য বৃষ্টি উপেক্ষা করেই নামাজ আদায় করেছেন মাঠে। এই সংখ্যাও এবার ছিল একেবারেই নগণ্য। ঈদের দিন মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য যে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয় সেগুলো চলেছে বটে, তবে ছিল প্রায় যাত্রীশূন্য।
শোলাকিয়া মাঠের এমন অবস্থা দেখে একজন মুসল্লি বলেন, ‘ঈদুল আজহায় মানুষের সংখ্যা কম হয় সত্য, কিন্তু এতটা কম হবে, সেটা কল্পনাতেও ছিল না। এর আগেও ঈদের দিন বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু জামাতে এত কম মানুষ হয়নি কখনো।’
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি আজিমউদ্দিন বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোরবানির ঈদে এমনিতেই মুসল্লি কম থাকে। তার ওপর প্রবল বৃষ্টির কারণে এবার আরও কম মানুষ এসেছে।’
ঈদুল ফিতরে জঙ্গি হামলার অভিজ্ঞতার কারণে এবার শোলাকিয়ায় নেয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা। র‌্যাব-পুলিশ ছাড়াও মাঠে মোতায়েন করা হয় বিজিবি, বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশি করে মাঠে ঢুকতে দেয়া হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের দিন সন্ত্রাসী হামলার কারণে এবার জামাতকে নিরাপদ রাখতে ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছিল।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top