সকল মেনু

মেরামতের পরদিনই বিস্ফোরিত হলো বয়লারটি

trampaco__127556_0
টঙ্গীর টাম্পাকো কারখানার বিস্ফোরিত বয়লারটি ১০ দিন আগে নষ্ট হয়েছিল। গতকাল শুক্রবার সেটি মেরামত করে কর্তৃপক্ষ। এক দিন পরেই বিস্ফোরিত হলো বয়লারটি। আর তাতে প্রাণ গেল ২৪ জন শ্রমিকের।
ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন একজন শ্রমিক এ তথ্য জানান।
বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন ওয়ার্ডে পোড়া শরীরের যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছেন শ্রমিক দিলীপ কুমার। টাম্পাকো কারখানায় হেলপারের কাজ করতেন তিনি। স্ত্রী গীতা রানী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে টঙ্গীর মরকুন গ্রামে থাকেন তিনি।
প্রতিদিনের মতো শনিবার ভোরে স্ত্রী গীতা রানী তাকে ডিম ও রুটি তৈরি করে একটি বক্সে ভরে দেন কারখানায় গিয়ে নাশতা করার জন্য। দিলিপ নাশতার বাটি রেখে সবে কাজে যোগ দেন, এর মধ্যেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় বয়লার। আর তাতে পুড়ে যায় তার শরীরের বিভিন্ন অংশ।
দিলীপ কুমার পাঁচ বছর ধরে ওই কারখানায় কাজ করছেন। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, দিন দশেক আগে কারখানার বয়লারটি নষ্ট হয়ে যায়। তখন সেখান থেকে শুধু শব্দ বের হতো। বিষয়টি মালিকপক্ষকে জানালে গতকাল সেটি মেরামত করা হয়। আজ ভোরে কাজ শুরু করতে গেলে তা বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়।
দিলীপ কুমার বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর বয়লারের খণ্ড আমার শরীরে লাগে। আর এতেই আমি পুড়ে যাই। এখন ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে।’
ট্যাম্পকো দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আরও ভর্তি হন মো. রাসেল খান, শাহ আলম ও আশিক। তাদের মধ্যে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন শাহ আলমের শরীরের ৯৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। আশিক দুপুরে বার্ন ইউনিটের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ছাড়া আরও অনেকে এই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হন।
পরে সন্ধ্যা ছয়টায় পাওয়া খবরে জানা যায়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরও চারজন। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৯টি লাশ আনা হয়েছে এই হাসপাতালে।
আজ ভোর ছয়টার দিকে টামপাকো ফয়েল লিমিটেডে বয়লার বিস্ফোরণের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত অবস্থায় আসেন ২৩ জন। তারা হলেন আনোয়ার হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন, ও তাহমিনা আক্তার, ইকবাল হোসেন, রুহুল আমিন, জাকির হোসেন, আল আমিন, রাসেল, রাসেল খান, নিজু, কামরুল ইসলাম, শাহিন, আশিক, রোকন, ফেরদৌস, কামাল হোসেন, সাঈদুর রহমান, প্রাণকৃষ্ণ, মনোয়ার, রিপন দাস, দিলিপ দাস ও শাহ আলম। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন, তাহমিনা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।
সর্বশেষ খবরে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেলের এখন ১৬ জন চিকিৎসাধীন আাছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান জানান, আহতদের চিকিৎসার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
পরে আহতদের দেখতে আসেন স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইসমাঈল খান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top