সকল মেনু

আবার বাড়লো ভোলার বাজার-দর

unnamedএম. শরীফ হোসাইন, ভোলা: কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ভোলায় বেড়েছে মসলা জাতীয় দ্রবসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দব্রের দাম। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে মসলার দাম। এক মাসের ব্যবধানে কিছু কিছু মসলার দাম কেজি প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু এলাচের দাম এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৮২০ থেকে ৯৫০টাকা। ঈদের মাত্র ৬দিন বাকি। ইতোমধ্যেই শহরের বাজারগুলোতে শুরু হয়ে গেছে ঈদের কেনাকাটা। সকল কেনাকাটার সাথে তাল মিলিয়ে চলছে মসলা পন্যের কেনাকাটাও। পৌর শহরের চক বাজার, নতুন বাজার, মিলন মার্কেট ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ঈদের কেনাকাটা করতে আসা খাদিজা আক্তার (লিমা) নামের এক ক্রেতা জানান, প্রতি বছরই ঈদের আগে সকল জিনিসের দাম বেড়ে যায়। এবার ঈদের কিছু দিন বাকি থাকলেও কিছু কিছু মসলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। তবে দোকানদারদের দাবি কিছু কিছু মসলার দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ক্রেতারা কিছু মসলা অনেক সামান্য পরিমাণে কিনে। খুচরা কিনতে গিয়ে তাদের কাছে দাম কিছুটা বেশি মনে হয়। বেশি করে কিনলে দাম বেশি মনে হবে না।
মিলন মার্কেট এলাকার প্রগতি এন্টারপ্রাইজের মালিক জানান, বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি মসলায় ২০০ থেকে ৩০০টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান বাজারে মসুরি ১৭০টাকা, মটর ডাল ৪৫ টাকা, খেসারী ৫৪ টাকা, ছোলা ৬৫ টাকা, আদা ১২০ টাকা, রসুন ১৭০ টাকা, জিরা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, সয়বিন ৮০টাকা থেকে ৯৫ টাকা, চাউল ৩৫ টাকা থেকে ৪২ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
শুধু মসলার বাজার নয়, সবজির বাজারেও লেগেছে আগুন। সম্প্রতি প্রবল বর্ষনে ভোলা সদর উপজেলার সর্বত্র সবজিক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে দ্রুত বেড়ে যায় সবজির দাম। বাজারে উর্ধ্বগতির জন্য সবজি
বিক্রেতারা বৃষ্টিকে দুষলেও বাজার মনিটরিং না হওয়াকে দুষছেন ক্রেতারা। তাদের দাবী বৃষ্টি এখন আর নেই। তার পরেও বাজারে কৃত্রিমভাবে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে ব্যবসায়ীরা।
ভোলা পৌর শহরের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি  নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের উর্ধ্বগতি। কোনো ভাবেই কমছে না প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। এতে  দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বাজার করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার ভোলা পৌর শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ১৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বেগুন প্রতিকেজি ৫৫ টাকা, করলা ৫০ টাকা, শসা ৪৫ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পেঁপেঁ ৩০ টাকা, টমাটো ৮০ টাকা, কাকরোল ৪০ টাকা, দেশি কুমড়া ২৫ টাকা, লতি ৪০টাকা, জিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, চড়া(গাডি) ৩০ টাকা। একই সাথে বেড়েছে শাকের দাম।
বাজার করতে আসা আল্পনা রানী জানান, কাঁচা বাজারের  কোন তরকারীর দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকার নিচে নেই। যার ফলে তাদের  মত অল্প আয়ের মানুষের খুবই সমস্যা হচ্ছে। উকিল পাড়ার পিয়াংকা বেগম বলেন, বর্তমানে সাধারন মানুষ বাজার করতে গিয়ে অল্পকিছু কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে করে
সংসার চালাতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। ওয়েষ্টার্ণ পাড়ার আসমা আহমেদ বলেন, আমি এখানে পড়ালেখার জন্য বাসা বাড়া নিয়ে থাকি। বাসা থেকে আমাকে হিসাব করে টাকা দেয়। কিন্তু হঠাৎ বাজারের বৃদ্ধির কারণে আমি খুবই হিমশিমে পড়ে গেছি।
আলীনগরের দিনমজুর মোঃ আকবর আলী বলেন, দিন যা আয় করি তা দিয়ে পরিবার নিয়ে কোনো রকমে চলছিল কিন্তু হঠাৎ করে চালসহ সব মালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আয়ের সাথে ব্যয়ের তাল মেলানো সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ অতিমাত্রায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
সবজি বাজারে গেলে দোকানিরা বলেন, গড়ে ৫০ টাকার নিচে কোনো  সবজি নাই। উচ্চমূল্যে তারা কাঁচা তরকারি  কিনছেন, তাই তাদের  বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।  অতিবৃষ্টিতে সবজির গাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পাইকারী বাজারে  দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে  তারা মনে করেন।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী মন্জুরুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, মোকাম থেকেই ব্যবসায়ীরা প্রতিটি মালের বিপরীতে কেজিতে ৩ থেকে ৬/৭ টাকা বৃদ্ধি করে পাইকাররা মাল বিক্রি করছে। সাধারণ নিন্ম আয়ের মানুষেরা জানান, হঠাৎ করে প্রতিদিনই বাড়ছে দ্রব্য মূল্য। এভাবে বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top