সকল মেনু

বেতন ছাড়া ১৮ বছর শিক্ষকতায় প্রতিবন্ধী প্রবীর

 
বেতন ছাড়া ১৮ বছর শিক্ষকতায় প্রতিবন্ধী প্রবীর
আপনি যেখানেই থাকেন, গ্রামে কিংবা শহরে, খেয়ে-পরে বাঁচার জন্য কিছু টাকা আপনার লাগবেই। প্রবীর পালেরও সেটা লাগেই, আর তার জন্য টিউশানি করেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বিদ্যালয়ে পড়িয়ে একটা টাকাও নেননি আজ পর্যন্ত!
শরীর তাকে সঙ্গ দেয়নি, প্রতিবন্ধকতা তার নিত্যসঙ্গী। শারীরিক সমস্যার জন্য তাকে চলতে হয় প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে। কিন্তু মনের জোরে ভর করে পশ্চিমবঙ্গের গোঘাটের মির্গা গ্রামের প্রবীর পাল প্রায় ২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন পড়াতে যান তার পাশের গ্রামের চাতরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে৷ তার জন্য পান না ন্যূনতম বেতন বা ভাতা! আয় বলতে স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি সামান্য কয়েকটা টিউশনের টাকা।
বাড়িতে থাকার বলতে শুধু মা। মা হীরা রানি বাড়িতে বসে ঠোঙা তৈরি করেন। এই উপার্জন থেকেই মা ও ছেলের ভাত জোটে। তবে পড়ুয়াদের শুধু বইয়ের পাঠ দেন না প্রবীর। পড়ুয়াদের শেখান প্রকৃতিকে ভালবাসতে। তাদের নিয়ে জৈব সার প্রয়োগ করে গড়েছেন বাগান। সেখানে লাউ, কুমড়ো, শাক, লঙ্কা-র চাষ হয়। চাতরা প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া একফালি জমিকে উর্বর করে তুলেছেন প্রায় একা হাতে৷ দিনভর কাটে এভাবেই। সকালে পড়ানো, দুপুরে চাষ আর বিকেলে বিদ্যালয়কে সাফ করতে নিজের হাতে তুলে নেন ঝাঁটা-ফিনাইল। প্রতিদিন স্কুলের শৌচাগার সাফ করেন ওই হামাগুড়ি দিয়েই।
কিন্তু এতো সব করেন কাজ ও শিশুদের ভালোবেসে। তার ভাষায়, ‘ছাত্ররা, মানে ওই শিশুরাই আমার প্রাণ। তাদের সঙ্গে গোটা জীবনটা কাটাতে চাই।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top